কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে বড় ভাইয়ের কাছ থেকে চাচার ওয়ারিশ কিনে আবু জালাল মো. জাবের নামে এক ব্যক্তির জায়গা ও দোকানঘর দখলে রাখার অভিযোগ ওঠেছে যুবলীগ নেতা আরাধন চন্দ্র বণিকের বিরুদ্ধে। অষ্টগ্রাম বড়বাজারে আবু জালাল মো. জাবেরের .৬৪ শতক জায়গার মধ্যে .৩৪ শতক জায়গা আরাধন চন্দ্র বণিক জোর করে দখলে রেখেছেন। এমনকি ওই জায়গায় আবু জালাল মো. জাবেরের দোকানের দেয়াল ভেঙ্গে আকৃতি পরিবর্তন করে যুবলীগ নেতা আরাধন নিজের মতো করে দোকানঘর করেছেন।
অষ্টগ্রাম বড়বাজারে একইভাবে মো. ওয়াজ উদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তির .৫৪ শতক জায়গায় করা দোকানঘর এই যুবলীগ নেতা দখলে রেখেছেন। দলীয় প্রভাবে বিগত আওয়ামী লীগ আমলে আরাধন বণিক জায়গাসহ দোকানঘরগুলো দখল করেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ২০ আগস্ট অষ্টগ্রাম থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার আসামি হিসেবে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন যুবলীগ নেতা আরাধন চন্দ্র বণিক। মামলায় ফেরার হলেও এখনো প্রশাসনসহ বিভিন্ন শক্তিকে ব্যবহার করে দোকানঘরগুলো নিজের দখলে রেখেছেন তিনি।
প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও জায়গা এবং দোকানপাট দখলমুক্ত করতে পারছেন না দুই ভুক্তভোগী আবু জালাল মো. জাবের ও মো. ওয়াজ উদ্দিন। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী আবু জালাল মো. জাবের ও মো. ওয়াজ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে দোকানঘর উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ভুক্তভোগী আবু জালাল মো. জাবের অষ্টগ্রাম উপজেলা সদরের পশ্চিম অষ্টগ্রামের মৃত আব্দুল ওহাব ভূঁইয়ার ছেলে ও মো. ওয়াজ উদ্দিন মধ্য অষ্টগ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে। অন্যদিকে আরাধন চন্দ্র বণিক মধ্য অষ্টগ্রামের নিতাই চন্দ্র বণিকের ছেলে এবং উপজেলা যুবলীগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক।
ভুক্তভোগী আবু জালাল মো. জাবেরের অভিযোগ, তার বড়ভাই একেএম হারুনের কাছ থেকে ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর আরাধন চন্দ্র বণিক .৫০ শতক জায়গা কিনেন। কিন্তু দলীয় প্রভাবে তিনি আবু জালাল মো. জাবেরের জায়গা থেকে আনুমানিক .৩৪ শতক জায়গা অতিরিক্ত দখল করে নেন। এমনকি সে জায়গায় থাকা আবু জালাল মো. জাবেরের দোকানের দেয়ালও ভেঙ্গে ফেলে আকৃতি পরিবর্তন করেন আরাধন চন্দ্র বণিক।
অন্যদিকে মো. ওয়াজ উদ্দিনের অভিযোগ, যুবলীগ নেতা আরাধন চন্দ্র বণিক বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অষ্টগ্রাম বড়বাজারে তার .৫৪ শতক জায়গায় করা দোকানঘর থেকে তাদের উচ্ছেদ করে দখল করেন। এখনো তার কাছ থেকে এই জায়গা ও দোকানঘর উদ্ধার করা যায়নি। গত বছরের ২০ আগস্ট অষ্টগ্রাম থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার আসামি যুবলীগ নেতা আরাধন চন্দ্র বণিক। বর্তমানে পলাতক আসামি হয়েও প্রশাসনসহ বিভিন্ন শক্তিকে ব্যবহার করে তিনি দোকানঘরের জবরদখল ধরে রেখেছেন।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা আরাধণ চন্দ্র বণিক জানান, ওয়াজ উদ্দিনসহ এই চক্রটির ভয়ে আমি নিজেই এলাকা ছাড়া। তাদের সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, ওয়াজ উদ্দিনের বাবা আব্দুল হেকিমের কাছ থেকে ২৫ বছর আগে তার বাবা আধা শতাংশ কিনেছিলেন। কেনার পরে বাজারে দুইবার আগুন লেগেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে দুইবার নতুন করে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বিগত ৭ বছর আগে তিনতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে দুই তলা সম্পন্ন করেছি। এরমধ্যে কেউ কোনদিন এমন দাবি বা অভিযোগ করেনি। কিন্তুু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে এই চক্রটি বিভিন্নভাবে তাকে হয়রানি করছে এবং পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না পেয়ে দোকান ভাঙচুর এবং দখল করে তালা পর্যন্ত মেরেছে। এখন তারাই পাল্টা অভিযোগ করছে।
Comments
comments