ঢাকারবিবার , ৬ আগস্ট ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. দেশজুড়ে
  3. পজিটিভ বাংলাদেশ
  4. ফটো গ্যালারি
  5. ফিচার
  6. ভিডিও গ্যালারি
  7. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হোসেনপুরে চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে হত্যা

প্রতিবেদক
Kolom 24
আগস্ট ৬, ২০২৩ ১:২০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে আরিফুল ইসলাম (৩০) নামে এক চিকিৎসকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (০৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে হোসেনপুর পৌর শহরের ঢেকিয়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ফ্যানের সাথে গামছা প্যাচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে আরিফুল ইসলামের পরিবারের দাবি, আরিফুলের স্ত্রী শাহীন সুলতানা মিরা সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে তাকে হত্যা করেছে।

আরিফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার মিঠামইন সদর ইউনিয়ন বাজারের রফিকুল ইসলামের ছেলে। সে নর্দান মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত স্ত্রী শাহীন সুলতানা মিরা পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা গ্রামের মৃত সিরাজউদ্দিনের মেয়ে। মিরা খাইরুন্নেছা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আরিফুল ইসলাম এমবিবিএস পাস করে রাঙ্গামাটিতে চিকিৎসক হিসেবে চাকরি করতেন। ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে মিরার সাথে বিয়ে হয়। পরে দুজনেই রাঙ্গামাটিতে চিকিৎসক হিসেবে চাকরি করেছেন। ৬ মাস আগে তারা দুজনেই চাকরি ছেড়ে হোসেনপুর বাজারে মর্ডাণ জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তারা দুজন হোসেনপুর বাজারের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেখানে যাওয়ার কিছুদিন পর থেকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ হতো। শনিবার (০৫ আগস্ট) রাতেও তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আরিফুলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে রাঙ্গামাটিতে চাকরি করে টাকাপয়সা জমিয়ে হোসেনপুরে এসে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে। আমার ছেলের বউ মিরা এই হাসপাতাল তার নামে করিয়ে নিয়েছে। আরিফুলের সব সম্পত্তি মিরা তার নামে করিয়ে নিয়েছে। আমার বড় ছেলে আশরাফুল ইসলাম রাজিবের স্ত্রী রুপা আক্তারের কাছে মিরা কিছুদিন আগে বলেছিলো, “এখন আরিফ নড়তে পারবে না। সব আমার হাতে নিয়ে নিছি। আর যাবে কোথায়।”

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, জুলাইয়ের ১ তারিখ সম্পত্তি নিয়ে মিমাংসার কথা ছিল। কিন্তু মিরা আর বসেনি। এখন আমার ছেলের লাশ পেলাম। আমার ছেলের সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে তার স্ত্রী মিরা হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

আরিফুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম রাজিব বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের সাথে মিরার প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো৷ আর ঝগড়া হলেই মিরার বড় ভাই ফোন করে তা জানাতো। আজ আর কোনকিছু জানায় নি। হঠাৎ করে রাত পৌনে ২ টার দিকে থানা থেকে ফোনে জানানো হয় আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে।

রাজিব বলেন, আমার ভাই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে মীরা ও তার ভাইয়েরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

অভিযুক্ত স্ত্রী শাহীন সুলতানা মিরা বলেন, শনিবার (০৫ আগস্ট) সকালে আমার স্বামীর বাবা তাকে ফোন দিয়েছিল। তারপর থেকেই আমার স্বামীর মুড অফ ছিল এবং খারাপ ব্যবহার করছিল। বিকাল ৩টার দিকে আমাকে তুই-তোকারি করে কোর্টে নিয়ে যায় সেপারেশনের জন্য। একপর্যায়ে আমাকে জোরে একটি থাপ্পড় দেয় আরিফ। থাপ্পড়ের চোটে আমার চশমাটি ভেঙে পড়ে যায়। কোর্ট বন্ধ থাকায় আমাকে নিয়ে চলে আসে।

মিরা বলেন, আমার চোখে সমস্যার জন্য রাতে আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম পরে আরিফ বাসায় আসলে ঘরের দরজা খুলে দেই। ঘরের লাইট অফ ছিল। এর মধ্যে আমি নামাজ আদায় করি। পরে লাইট অন করতেই আরিফ রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। অনেক ডাকাডাকি করলেও আরিফ দরজা খুলেনি। পরে বাসার মালিককে খবর দেই। বাসার মালিক এসে আরিফকে দরজা খুলতে বলেন। কিন্তু আরিফ দরজা খুলেনি। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে আরিফের ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে।

মিরা আরও বলেন, পরে ঘরে একটা চিরকুট পাওয়া যায়। যা আমার স্বামী রেখে গেছেন। সেই চিরকুটে লিখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না।”

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, পুলিশ যখন লাশ উদ্ধার করে তখন ঘরের দরজা ভিতর থেকে লাগানো ছিল। আরিফুলের মরদেহ ফ্যানের সাথে গামছা প্যাচানো অবস্থায় ছিল। শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। আরিফুলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Comments

comments