বৃটিশ অত্যাচারীদের শাষন আমলে ইংরেজ বণিকরা কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে প্রতিষ্ঠা করেছিল নিন্দিত নীলকুঠি। এই অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকদেরকে মারধর করে নীল চাষে বাধ্য করত বৃটিশ অত্যাচারীরা। যারা নীল চাষ করতে অপারগতা প্রকাশ করত তাদের উপর চালানো হতো কঠিন বেত্রাঘাত। তুলে নেয়া হতো পিঠের চামড়া। আবার কখনো কখনো ওইসব কৃষকের কোমড়ে দড়ি বেঁধে গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখত বৃটিশরা।
ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, ইংরেজ বণিকরা ১৮৮৬ সালে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় নীলকুঠি প্রতিষ্ঠা করে কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের বিল পাড়ে। নীল চুলি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দরিদ্র কৃষকরা মাঠে মাঠে কাজ করলেও তাদেরকে বেতন না দিয়ে সন্ধা হলেই বৃটিশরা কৃষক শ্রমিকদের কানমলা দিয়ে খালি হাতে বিদায় দিত। বৃটিশদের এই লাগামহীন অত্যাচারে তখনকার সময়ে এই অঞ্চলের একজন কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এছাড়াও তাদের জুলুম-অত্যাচারে বহু মানুষ পঙ্গুত্ব জীবন জাপন করে মৃত্যুবরণ করেন। জালালপুরের নীল কুঠির ইটের প্রতিটি পাঁজরে এখনও রয়েছে পূর্ব পুরুষদের হাহাকার আর আর্তনাদ।
পরাধীনতার কুফল যে কতটা বিষাক্ত বর্তমান প্রজন্মের কাছে তারই দৃষ্টান্ত এই নারকীয় নীল কুঠি। যার
ধ্বংসাবশেষ এখনও জালালপুরের বুকে জেগে রয়েছে। পরাধীনতার কান্না যে কত নিষ্ঠুর এ নীলকুঠি তারই দৃষ্টান্ত।
জাতির স্বার্থে নীলকুঠি টিকিয়ে রাখার দাবি জানাল ‘এগারজন’
এই নীলকুঠি এদেশের মানুষের কাছে কাঁটা হয়ে থাকলেও তার দিকে তাকিয়ে নতুন প্রজন্ম পরাধীনতার প্রতি থুথু ছুড়বে। বৃহত্তর কল্যানে, জাতির স্বার্থে নীলকুঠিকে সরকারি ভাবে টিকিয়ে রাখার দাবি তুলেছেন দৈনিক খোলা কাগজের পাঠক ফোরাম এগারজন’র। এগারজন’র কটিয়াদী উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মাশহুদা খানম বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নীলকুঠিটি সংরক্ষণে রাখার দাবি জানান তিনি।’
Comments
comments