কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় সিরাজুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে স্ত্রীর সামনেই নিজ ঘরের বারান্দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (০৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় করিমগঞ্জ পৌর এলাকার কলাতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিরাজুল ইসলাম করিমগঞ্জ পৌর এলাকার কলাতলী গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে। সিরাজুল কৃষি কাজের পাশাপাশি একটি টং দোকানে ব্যবসা করতেন।
এ ঘটনায় শনিবার (০৮ এপ্রিল) সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার করিমগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে ১১ জনের নামোল্লেখ ও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পরপরই তদন্তকারী কর্মকর্তা করিমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত এজহারনামীয় ৩ জন আসামিকে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন, করিমগঞ্জ পৌর এলাকার কলাতলী গ্রামের ফারুক মিয়ার স্ত্রী রুবিনা (২৪), আতাউর রহমানের স্ত্রী আকলিমা আক্তার (৩৫), জামান মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম আক্তার (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সিরাজুল ইসলামের জমিতে একই গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে জামান ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করছিলেন। জমি বর্গাচাষের টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ট্রাক্টর মালিক জামানের সাথে কথাকাটাকাটি হয় সিরাজুলের। এ সময় তিনি হামলার ভয়ে দ্রুত জমি থেকে বাড়িতে চলে যান। কিছুক্ষণ পর জামান ও তার স্বজনরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে। এ সময় ঘরের বারান্দায় ঢুকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় সিরাজুলকে। স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে স্ত্রী তাসলিমা আক্তারও গুরুতর আহত হন। পরে আশংকাজনক অবস্থায় সিরাজুল ইসলামকে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৪৫) বলেন, আমার স্বামী প্রাণে বাঁচতে নিজের ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু জামান ও তার স্বজনরা আমাদের ঘরের ভেতর ঢুকে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে আমার স্বামীকে। টাকা চাওয়াই আমার স্বামীর কাল হলো। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক রিয়াদ শাহেদ রনি বলেন, হাসপাতালে আনার পূর্বেই সিরাজুল ইসলাম মারা যান। রক্তক্ষরণের ফলে তার শরীর একবারে ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত এজহারনামীয় তিনজন আসামিকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
Comments
comments