প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের ১২ বছরের মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেন বাবা। সেই জঘন্য ঘটনার প্রায় নয় বছর পর কিশোরগঞ্জের একটি আদালত ওই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন। হত্যার দায়ে মেয়েটির বাবা, চাচা এবং চাচাতো ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একইসাথে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নূরুল আমিন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের সময় আসামিদের কেউই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না; জামিনে মুক্তির পর থেকেই তারা পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনই করিমগঞ্জ উপজেলার কিরাটন ইউনিয়নের ভাটিয়া জহিরকোনা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন, মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (আঙ্গুর), তার ভাই খুরশিদ মিয়া এবং ভাতিজা সাদেক মিয়া।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট রাতে আনোয়ারুল ইসলাম তার ভাই ও ভাতিজাকে নিয়ে নিজের মেয়ে মীরা আক্তার আসমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখেন। পরদিন ১১ আগস্ট তিনি নিজেই করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যেখানে প্রতিপক্ষ আবুবকর সিদ্দিকসহ ১৬ জনকে আসামি করেন।
কিন্তু তদন্তের একপর্যায়ে উঠে আসে ভিন্ন চিত্র। পুলিশ প্রমাণ পায়, আসমার খুনের সঙ্গে তার বাবাই সরাসরি জড়িত। এরপর পুরোনো মামলাটি থেকে নির্দোষদের অব্যাহতি দিয়ে করিমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক অলক কুমার দত্ত নতুন মামলা করেন আনোয়ারুল ইসলাম, তার ভাই, ভাতিজা ও স্ত্রী মোছা. নাজমুন্নাহারকে আসামি করে।
২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত অভিযোগপত্রে চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আদালত মোছা. নাজমুন্নাহারকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেন।
জেলা জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্যপ্রমান শেষে আজ এ রায় ঘোষনা করেছেন। তবে মামলার সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামির কেউই বর্তমানে কারাগারে নেই। তারা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।
Comments
comments