কিশোরগঞ্জে এবার ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র ষাড়, বলদ, গাভী, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মিলে ৯৭ হাজার ৮২১টি কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু প্রস্তুত করেছে খামারিরা। যা জেলার চাহিদা মিটাতে সক্ষম বলে জানা গেছে। এমনকি বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা যাবে। খামারিরা সারা বছর গবাদি পশু লালন পালন করে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ জানায়, জেলায় চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ৬৭৬টি কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর। আর প্রস্তুত হয়েছে ৯৭ হাজার ৮২১টি গবাদি পশু। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে। কোরবানির হাটে গবাদি পশুর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে ৪৭টি ভেটেনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণের জন্য ২৩৮ জন কসাই ও ২৫০ জন মৌসুমী কসাইদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ১৩টি অনলাইন কোরবানি পশুর হাট খোলা হয়েছে। প্রতিদিন গবাদি পশুর ছবি আপলোড করা হচ্ছে। অনলাইনে বিক্রির জন্য খামারিদের উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। এ বছর সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খড়, ভুষি, কাঁচা ঘাষ ও খৈল খাওয়ানোর মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরণ স্টেরোয়েড হরমোন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়নি।
এদিকে কিশোরগঞ্জের বেশ কয়েকজন খামার মালিক জানান, মূলত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা সারা বছর গরু ছাগল লালন পালনে খামারে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত খামারে কোনো পাইকারের আগমন দেখা যাচ্ছে না। অথচ প্রতি বছর রোজার ঈদের পরই ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গবাদিপশুর পাইকাররা এসে গরু ছাগলের দরদাম ঠিক করে বায়না দিতেন। এ অবস্থায় গরু ছাগল বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।
বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস এসোসিয়েশন কিশোরগঞ্জ জেলার শাখার সভাপতি আজমল খান বলেন, জেলার ডেইরী শিল্প মূলত ক্ষুদ্র খামারের উপর নির্ভরশীল। বন্যা পরিস্থিতিতে গবাদি পশু কেমন বিক্রি হবে তা নিয়ে ক্ষুদ্র খামারিরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। আবার গবাদি পশুর চাহিদাও কম। সবাই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নজরুল ইসলাম জানান, হাওর ও সমতল ভূমির সমন্বয়ে গঠিত প্রাণিসম্পদ সমৃদ্ধ একটি জেলা কিশোরগঞ্জ। ঈদে খামারিদের উপর বন্যার প্রভাব খুব একটা পড়বে না। অনলাইনে গরুর হাটসহ সকল কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে খামারিরা লাভবান হবেন।
Comments
comments