কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে যথাযোগ্য মর্যাদা না দিয়ে ফেস্টুন ব্যানারে নাম বিন্যাসে অমিল রাখার কারণে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিবাদের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ব্যানারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপরে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যের নাম দেখা যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে ৩০ আগস্ট রাতে একটি স্ট্যাটাস দেন। এই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে জেলা উপজেলা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকে অসম্মান করা হয়েছে। কারণ একজন জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য তার যেই পরিচয় থাকুক না কেন সে একজন সদস্য। সে কখনও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দুইজন মুক্তিযোদ্ধাকে অবমাননা করে কারও মন খুশির জন্য এই বিশৃঙ্খল আচরণটি দুঃখজনক। এতে করে দলীয় শৃঙ্খলা নষ্টসহ ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে কুপ্রভাব পড়বে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন। এ ধরণের আচরণ করতে কে বা কারা সহযোগিতা করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর ফেসবুক পোস্টটির কিছু অংশ তুলে ধরা হলো- সম্মানিত কিশোরগঞ্জ আওয়ামী পরিবারের সদস্যবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম ২৯/০৮/২০২১ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ ১৫ই আগস্ট এবং একুশে আগস্ট এর নিহতদের স্মরণে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের উদ্যেগে শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। যে আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজালসহ জেলা ছাত্রলীগের কিছু সাবেক নেতৃবৃন্দ। আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করলাম যে সেখানে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর কন্যা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছোট বোন কিশোরগঞ্জ সদরের মাননীয় সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপিকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি।
আমি আরও দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম যে, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দকে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে জেল জুলুম, অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন এবং বয়সে অনেক সিনিয়র তাদের নামের আগে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্যকে প্রধান আলোচক করেছেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপরে নাম দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. এম.এ আফজল এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি ভুলবশতঃ হয়েছিল কি না জানি না তবে ব্যানারে লেখা থাকলেও তারা সর্বশেষ বক্তা হিসেবে আমাকেই রাখে এবং নিয়ম শৃঙ্খলা রেখেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। তবে কে বা কারা কেন এ কাজটি করেছে বা ভুল করে করেছে কি না এটা জানা নেই। অনভিজ্ঞ ও জ্ঞানের অভাবে কাজটি হয়েছে।
Comments
comments
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান নয়নের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বর হতে এ বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সমাবেশে বক্তারা বলেন, জেলা ছাত্রলীগের অসাংগঠনিক আচরণের কারণে সক্রিয় ছাত্রলীগের মধ্যে কোলাহল তৈরি হয়। ব্যক্তিগত ফেইসবুক প্রোফাইলে লুৎফুর রহমান নয়ন তার ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেয়। সেই পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে কোন কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই বহিষ্কার করা সাংগঠনিক নীতিমালার পরিপন্থি। আমরা জেলা ছাত্রলীগ কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি। কারণ তারা না জেনে না বুঝে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভুল বুঝিয়েছে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে বলেও বলেন বক্তারা।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক কাজী আবেদীন সোলায়মানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক শাহ সারোয়ার জাহান, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আশিকুর রহমান হৃদয়, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য নওশাদ খান ফাহিম, শাহরিয়ার হাসান আপন প্রমুখ।
Comments
comments