কিশোরগঞ্জের (ভৈরব সার্কেল) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এএসপি নাজমুস সাকিবকে গ্রেপ্তার না করায় ও তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না হওয়ার প্রতিবাদে আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জে গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় একটি অনলাইন নিউজপোর্টাল অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী।
সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী বলেন, ভৈরব সার্কেলে কর্মরত পুলিশের এএসপি আসামি নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আমি তিনটা মামলা দায়ের করি। আসামি নাজমুল সাকিব আমার সাথে বিয়ে নিয়ে নাটক করে। বিয়ের স্বীকৃতির দাবিতে গেলে আসামি নাজমুস সাকিবের নির্দেশে তাঁর পরিবার আমাকে হত্যাচেষ্টা করে। পরে আদালতে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করি। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২০ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর বিচারক মো. শওকত আলীর আদালতে ওই নারী ব্যাংক কর্মকর্তা বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষন মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল শাহবাগ থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে মামলাটি শাহবাগ থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। আসামি তদন্তকারী অফিসারের উর্ধ্বতন অফিসার হওয়ায় তিনি মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করতে তৎপর রয়েছেন। মামলাটির এফআইআর থাকলেও তাকে পুলিশ অ্যারেষ্ট করছে না। সে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। তিনি খুবই ক্ষমতাধর অফিসার। তাঁর বিরুদ্ধে যতই প্রমান সহ অভিযোগ থাকুক পুলিশ কখনো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। একই সঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কৌশলে ঘুষ চাইছেন ও নাজেহাল করছেন বলেও অভিযোগ করেন ওই নারী।
ওই ভুক্তভোগী নারী জানান, নাজমুসের প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীও নারী নির্যাতন ও যৌতুক আইনে মামলা করেছিলেন। কয়েক মাস জেলও খেটেছেন নাজমুস। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নাজমুসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি আওয়ামী লীগ শাসনামলে বঞ্চিতের শিকার দাবি করে আবার চাকরিতে যোগ দেন।
ওই নারী বলেন, চাকুরী বিধি অনুসারে, ফৌজদারি মামালার পলাতক আসামি জামিন না নিয়ে কিভাবে বহাল তবিয়তে আছে? যার বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর মামলাসহ মোট ৬টি মামলা চলমান রয়েছে। আমার সাথে সে অন্যায় অবিচার করে বিয়ে নামক নাটক করেছে। আমাকে শুধু ভোগ করেছে। আমি আমার দেশের আইনের কাছে বিচার চাচ্ছি।
ওই ভুক্তভোগী নারী আরও বলেন, নাজমুস সাকিবের প্রথম স্ত্রী ইসরাত রহমান ও দ্বিতীয় স্ত্রী মুক্তা এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুক আইনে মামলা করেছিলেন। কয়েক মাস জেলও খেটেছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি আওয়ামী লীগ শাসন আমলে বঞ্চিতের শিকার দাবি করে আবার চাকরিতে যোগদান করেন।।
অভিযুক্ত ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব বলেন, এ বিষয় আমি জানি না। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই। তদন্ত চলছে। তদন্তে যা হবে তাই-ই।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, এটা তদন্তাধীন বিষয়। এটা আমরা ক্লোজলি মনিটরিং করতেছি। তদন্ত চলমান আছে। তদন্তকারী কর্মকর্তার ঘুষ দাবির প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর এইসব আছে নাকি। এইসব মিথ্যা বানোয়াট মিথ্যাচার।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Comments
comments