প্রবাসীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে দখলের অভিযোগ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

কিশোরগঞ্জে প্রবাসীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে দখলের অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি খাইরুল মোল্লা ও তাঁর বাবা করিম মোল্লার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ওমান প্রবাসী রিমা আক্তার।

ভুক্তভোগী রিমা আক্তার জেলা শহরের উকিলপাড়া নীলগঞ্জ রোড এলাকার ওমান প্রবাসী মোঃ শফিকের স্ত্রী। অন্যদিকে অভিযুক্ত খাইরুল মোল্লা ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়নের করিম মোল্লার ছেলে ও করিম মোল্লা একই ইউনিয়নের মৃত আঃ ছোবান মোল্লার ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে রিমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী মোঃ শফিক ২২ বছর যাবত ওমান প্রবাসী। আর আমি ৯ বছর হলো ওমান প্রবাসী। গত ১৪ জানুয়ারি আমাদের প্রবাস জীবনের সঞ্চয় ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা দিয়ে শেলোরা মোল্লার কাছ থেকে উকিলপাড়া নীলগঞ্জ রোডে বাড়িসহ ৮ শতাংশ জায়গা ক্রয় করি। পরে বিভিন্ন লোকের কাছে বাসা ভাড়া দেই। এ বাসারই নিচতলায় আগে থেকেই থাকতেন খাইরুল মোল্লার পরিবার।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ২২ হাজার টাকায় তিনতলা বাসার নিচতলা ভাড়া নেন তাঁরা। পরে ফেব্রুয়ারি, মার্চ এবং এপ্রিল মাসে আমাদের ভাড়া দেয়। এরপর থেকে তাঁরা আমাদের আর ভাড়া দেয়নি। ভাড়া চাইতে গেলে উল্টো হুমকি এবং প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার এবং এই বাসাসহ জায়গা তাদের বলে দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। আমি তাদের ভয়ে আমি আমার নিজ বাসাতেও এখন বসবাস করতে পারছি না। পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।

রিমা আক্তার বলেন, গত দেড় মাস আগে এসব সমস্যার প্রতিকার চেয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় আমার স্বামী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও অদৃশ্য কারনে পুলিশ আমাকে কোন সহযোগিতা করেনি। এমনকি আমার ভাড়াটিয়া উল্টো আমার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। গত ২১ জুলাই কিশোরগঞ্জ জজ আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন এবং আমার পক্ষে রায় প্রদান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রিমা আক্তারের দুই মেয়ে স্নেহা, সারা, বড় ভাই শাহীন, ভাবী স্বপ্না আক্তার, বোনের মেয়ে মাইশা আক্তার।

এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত খাইরুল মোল্লাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কোনো পদে ছিলাম না। আমি ঠিকাদারি করি। আমার নামে কোনো মামলাও নেই। আমি ওই বাসাতে দেড় বছর ধরে থাকি না। পরিবার নিয়ে অন্য বাসায় থাকি। বাবা-চাচার মধ্যে জমি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। সম্পত্তি বাবা-চাচার মধ্যে বণ্টন হয়নি। সব এজমালি সম্পদ। তাঁরা এই জায়গা কিনেছেন, আমার চাচির কাছ থেকে। এই জায়গা নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’

তবে খাইরুল মোল্লা যে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সে বিষয়টি মেসেঞ্জারে নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রিফাত আহমেদ বচন।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধে আদালতে মামলা ছিল। মামলা চলাকালে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যেন না হয়, সেটা আমরা দেখেছি। আদালত সিদ্ধান্ত দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

Comments

comments