ঢাকাশুক্রবার , ৫ জানুয়ারি ২০২৪
  1. অন্যান্য
  2. দেশজুড়ে
  3. পজিটিভ বাংলাদেশ
  4. ফটো গ্যালারি
  5. ফিচার
  6. ভিডিও গ্যালারি
  7. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাবা-মায়ের কলহের বলি ৯ বছরের শিশু, বাবা আটক

প্রতিবেদক
Kolom 24
জানুয়ারি ৫, ২০২৪ ৭:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জে বৃষ্টি আক্তার নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই বাবার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) গভীর রাতে সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের খিলপাড়া বন্দের বাইত এলাকা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতেই বৃষ্টি আক্তারের বাবা আরজু মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। আরজু মিয়া রশিদাবাদ ইউনিয়নের শিমুলিয়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আরজু মিয়া ও ফাতেমা আক্তারের ২০১০ সালে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। স্বামী স্ত্রীর কলহের কারণে দেড় বছর আগে তাঁরা আলাদা বসবাস করতেন। ৪ মাস আগে আরজু ও ফাতেমার ডিভোর্স হয়ে যায়। আরজু মিয়া ও ফাতেমা আক্তারের ডিভোর্সের পর বড় ছেলে ফাহিম তাঁর বাবা আরজুর সাথে থাকত। দুই মেয়ে বৃষ্টি আক্তার ও জান্নাতুল তাঁদের মা ফাতেমার সাথে থাকত। সংসার চালানোর জন্য ফাতেমা জেলা শহরের নগুয়া এলাকার একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে আরজু মিয়া ফাতেমা আক্তারের বাড়িতে যায়। পরে বৃষ্টি ও জান্নাতুলকে শীতের কাপড় কিনে দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে বের হয় যায়। পরে রাতে আরজুর আত্মীয় স্বজনরা ফাতেমাকে জানায় যে তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলছে। পরে সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের খিলপাড়া বন্দেরবাইত এলাকা থেকে পুলিশ গিয়ে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে।

বৃষ্টি আক্তারের মা ফাতেমা আক্তার বলেন, আমি মঙ্গলবার সকালে কাজে যাই। আমি বাড়িতে না থাকা অবস্থায় দুপুরে আরজু আমাদের বাড়িতে এসে বৃষ্টি ও জান্নাতুলকে নিয়ে যায় শীতের কাপড় কিনে দেয়ার কথা বলে। বিকেলে বাড়িতে ফোন দিলে বিষয়টা জানতে পারি। আমি তখন আমার ফুফুকে বলি, ‘আপনি কেনো মেয়েদের তার সাথে যেতে দিলেন। সে কেমন তাতো আপনারা জানেন।’ পরে আমার ফুফু আমাকে বলেন, শীতের কাপড় কিনে দিবে বললো তাই যেতে দিয়েছি। শতহলেওতো আরজু তাদের বাবা।’

ফাতেমা আক্তার বলেন, রাত ৮টায় বৃষ্টি তার বাবার মুঠোফোন থেকে মাকে ফোন দিয়ে বলে, ‘আব্বা বলতেছে রাতে আব্বার সাথে থাকতাম।’ পরে আমি বৃষ্টিকে না করি ওইখানে থাকতে। এই কথা শোনা মাত্রই আরজু আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে দেয়। পরে রাত সাড়ে বারোটার দিকে আরজুর ভাতিজা আমাকে ফোন দিয়ে বলে, ‘বৃষ্টিকেতো মাইরা ফেলছে।’ এরপর থানা থেকে আমাকে ফোন দেয়া হয়। পুলিশ আমাকে লাশ সনাক্ত করার জন্য ওইখানে যেতে বলে। আমি গিয়ে দেখি আমার মেয়ে লাশ পড়ে আছে। আমার মেয়েকে আরজুই হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

ফাতেমা আক্তার যে বাসায় কাজ করেন সে বাসার মালিক আরজানা পিংকি বলেন, আমরা গিয়ে দেখি লাশ পড়ে আছে মাটিতে এবং মরদেহের পাশেই হাত-পা বাধা অবস্থায় আরজু মিয়া বসা। আর ৩ বছর বয়সী জান্নাতুল শীতে জুবুথুবু হয়ে বসে আছে তাদের পাশে। বৃষ্টি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়তো। ১৫ দিন আগে বাড়িতে আসে। শুক্রবার তাকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসার কথা ছিল। এমন মৃত্যু মানতে পারছি না। আমার গৃহপরিচারিকাকে আরজু অনেক অত্যাচার করতো এবং কয়েকবার মেরে ফেলার চেষ্টাও করেছে। সন্দেহ করছি বৃষ্টিকে আরজুই হত্যা করে নাটক সাজিয়েছে।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, বৃষ্টি আক্তারের মরদেহের গলায় দাগ পাওয়া গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি রহস্যজনক। প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Comments

comments