দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাদারীপুর জেলা শাখার সহ সভাপতি তুহিন দর্জীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হায়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার পখিরা এলাকা থেকে একটি প্রাইভেট কারে করে স্থানীয় লোকমান মালোতের গৃহপালিত একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তুহিন দর্জি ও তাঁর সহযোগীরা। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে ধাওয়া দিলে তাঁরা সেখান থেকে দ্রুত সড়ে পড়েন। পরে টহল পুলিশকে জানালে পুলিশ চুরি হওয়া ছাগল বহন করা প্রাইভেট কারটির গতিরোধ করে। পরে ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দর্জি এবং তাঁর চার সহযোগী জুবায়ের হাওলাদার, রানা ব্যাপারী, রবিউল ইসলাম ও মাহবুব তালুকদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় চুরির কাজে ব্যবহৃত ওই প্রাইভেট কার জব্দ ও ছাগল উদ্ধার করা হয়। মামলা হওয়ার এক দিন পর ছাত্রলীগ নেতা তুহিন ও তাঁর চার সহযোগীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপংকর রোয়াজা সাংবাদিকদের জানান, ‘গতকাল মঙ্গলবার এই ছাগল চুরির মামলার শুনানি ছিল। আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আমরা পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করি। কারণ, মামলার বাদী এজাহারে আরও ৫টি গৃহপালিত ছাগল একই কায়দায় চুরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এই ছাগল চোর চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছেন কি না, সেই বিষয় তদন্ত করতেই আমরা পাঁচ দিন করে রিমান্ড চাই। কিন্তু আদালতে আসামির পক্ষের লোকজন মামলার বাদীকে হাজির করেন। সেখানে বাদী আসামির জামিন দেওয়া হলে তাঁর আপত্তি নেই বলে আদালতকে জানান। এ কারণে আদালত রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের জেলহাজতে বসেই জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।’
এসআই দিপংকর রোয়াজা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দর্জির নামে সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৭টি মামলা আছে। বর্তমানে আসামি তুহিন ও তাঁর সহযোগীরা কারাগারে আছেন।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, ‘ছাগল চুরির ঘটনাটি সারা দেশে সমালোচিত হয়েছে। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তুহিন দর্জি গ্রেপ্তার হওয়ার দিনই আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে তাঁর বহিষ্কার চেয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছি। চিঠি পাঠানোর ৬ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ছাত্রলীগের একটি প্যাডে তুহিনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।’
Comments
comments
মাদারীপুরে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজ্জাক হাওলাদার একাডেমীর সাবেক সভাপতি ফয়সাল আহমেদ মিঠু হাওলাদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী চলা এই মানববন্ধনে স্লোগান দেন ‘মিঠু ভাইর কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী ওই মহিলা একটি চরিত্রহীন, সে টাকার জন্য সব করতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি দ্রুত তদন্তপূর্বক এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান।
এর আগে পুরান বাজার আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় শতাধিক নারী পুরুষ।
এতে পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান অনিক, সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ হাওলাদার, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সাদ্দাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আরিফুল হক পাপ্পু, ছাত্রলীগের সদর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিলন, পৌর সাধারণ সম্পাদক মারুফ, যুবলীগের প্রদার সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন, গাজী ইমরানসহ ছাত্রলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত ২৭ নভেম্বর রাস্তি এলাকায় গৃহবধূকে অস্ত্রের মুখে হাত-পাঁ বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় ১ নভেম্বর মাদারীপুর সদর মডেল থানায় ফয়সাল আহমেদ মিঠু হাওলাদারকে প্রধান আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
Comments
comments