পবিত্র ঈদ-উল-আযহা ঘনিয়ে এলেও করোনার কারণে এখনও গবাদিপশুর পাইকারদের আগমন নেই খামারগুলোয়। ফলে কাংখিত দাম পাওয়াতো দূরের কথা বরং লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন কিশোরগঞ্জের খামারিরা। ঈদ-উল-আযহা যতই ঘনিয়ে আসছে ততই দুশ্চিন্তা বাড়ছে তাদের। তবে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে করোনার কারণে খামারিদের ব্যবসার উপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় ক্যাটাগরি ভিত্তিক ২-৫টি গরু নিয়ে খামার আছে ২৪ হাজার ১৪৪টি, ৬-৯টি গরু নিয়ে ২৬৫টি, ১০-২০টি গরু নিয়ে ৫০টি, ৫১’র উর্ধ্বে ১টি। এ বছর গরু ছাগল মোটাতাজাকরণ খামারির সংখ্যা ১৭ হাজার ৬১১টি। মোট কোরবানিযোগ্য গরুর সংখ্যা ৭২ হাজার ৯০৮টি, ছাগলের সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৫২টি, ভেড়া ৪ হাজার ৭৯১টি, মহিষ ১ হাজার ৩১৪টি। বাজার মনিটরিং এর জন্য ৪৪টি ভেটেনারী মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসার প্রদানের জন্য। কোরবানির চামড়া ছাড়ানো এবং সংরক্ষণের জন্য ৪৫৫ জন কসাই এবং মৌসুমী কসাইকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ বছর সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খড়, ভুষি, কাঁচা ঘাস ও খৈল খাওয়ানোর মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরণ স্টেরোয়েড হরমোন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়নি।
জানা যায়, ১৩টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিজস্ব ফেসবুক পেইজে গবাদিপশুর ছবি, মূল্য, খামারির ঠিকানা দেয়া হবে। ফুড ফর ন্যাশন ওয়েব সাইটে কোরবানির হাট চালু হয়েছে। তবে বেশিরভাগ খামারির তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান না থাকার কারণে নিবন্ধন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের বেশ কয়েকজন খামার মালিক জানান, মূলত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা সারা বছর গরু ছাগল লালন পালনে খামারে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু করোনার কারণে এখন পর্যন্ত খামারে কোনো পাইকারের আগমন দেখা যাচ্ছে না। অথচ প্রতি বছর রোজার ঈদের পরই ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গবাদিপশুর পাইকাররা এসে গরু ছাগলের দরদাম ঠিক করে বায়না দিতেন। এ অবস্থায় গরু ছাগল বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। একই সঙ্গে খামারে বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে আনা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন খামারিরা।
বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস এসোসিয়েশন কিশোরগঞ্জ জেলার শাখার সভাপতি আজমল খান বলেন, জেলার ডেইরী শিল্প মূলত ক্ষুদ্র খামারের উপর নির্ভরশীল। করোনা পরিস্থিতিতে গরু কেমন বিক্রি হবে না হবে তা নিয়ে আতংকের মধ্যে আছি কোরবানি মানুষ আদৌ দিবে কি না। ছোট গরু বিক্রি হচ্ছে বড় গরুর চাহিদা কম। কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। সবাই এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নজরুল ইসলাম জানান, এবার ঈদে খামারিদের উপর করোনার প্রভাব খুব একটা পড়বে না। অনলাইনে গরুর হাটসহ সকল কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে খামারিরা লাভবান হবেন।
Comments
comments