ঢাকামঙ্গলবার , ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. দেশজুড়ে
  3. পজিটিভ বাংলাদেশ
  4. ফটো গ্যালারি
  5. ফিচার
  6. ভিডিও গ্যালারি
  7. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সুফিবাদে যারা বিশ্বাস করে জামায়াত তাঁদের হত্যা করতে চায়- ফজলুর রহমান

প্রতিবেদক
Kolom 24
সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫ ১০:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পদ স্থগিত হওয়া বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ফজলুর রহমানের পদ ফিরিয়ে দেওয়াসহ আগামী নির্বাচনে তাঁকে বিএনপির এমপি প্রার্থী করার দাবিতে নেতাকর্মীরা বিশাল মিছিল করেছে। সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা ইটনা সদরে আয়োজিত এ মিছিলে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়।

এ মিছিলে মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ লোকজন এতে যোগ দেন। মিছিলটি ইটনা জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু হয়ে কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে ফজলুর রহমান নিজেও অংশ নেন। এর আগে বিকালে সাড়ে তিনটার দিকে জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বিজয় কেতনের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ফজলুর রহমান।

জামায়াত তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে ফজলুর রহমান বলেন, আমি ধর্ম মানি না- এটা জামাত ছাড়া আর কেউ বলে না। তারাই এই অপ্রচার চালাচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সুফিবাদে বিশ্বাস করি। যে তরিকার, এর মূল আউলিয়া হলেন, হযরত আব্দুল কাদির জিলানি, খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতি, হযরত শাহজালাল, শাহ পরান। কিন্তু এই সুফিবাদে যারা বিশ্বাস করে জামায়াত তাঁদের হত্যা করতে চায়। তারা এ তরিকাপন্থীদের লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়। যা দেশবাসী দেখেছে। সেই কারণে জামায়াত বলে আমি নাকি ধর্ম বিশ্বাস করি না। দল থেকে তিনমাসের জন্য আমার সব পদ স্থগিত করা হলো। আমি বুঝলাম না আমার অপরাধ কী। এর পরেও দলের সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিয়েছি। আপনারাও মেনে নিয়েছেন। তিনমাস পর হয়তো স্থগিতাদেশ উঠে যাবে।

এ সময় ফজলুর রহমান তাঁর দলীয় পদ স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, প্রথমে আমার বিশ্বাস হয়নি। যে দলের জন্য আমি সব করছি, সে দল আমাকে শো-কজ করবে এটা বিশ্বাস হয়নি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়া, মুক্তিযুদ্ধের যে মুখটা, এই মুখটাতো গত একবছর ধরে আমি রক্ষা করছি। বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল, শহীদ জিয়ার দল- এটা আমি রক্ষা করছি। কেবল আমি বলছি এসব কথা। দল থেকে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলো আমি কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছি। আর ধর্মের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেছি। আমি উত্তর দিলাম কিন্তু মানা হলো না।

তাঁর বিরুদ্ধে সারা দেশের রাজাকার আলবদররা বড় চক্রান্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে হলেও আমি যেন দল থেকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না পাই সে চেষ্টা করবে। এখন কেবল আমি চাইলে হবে না, আপনাদের বলতে হবে এই লোককে আমরা চাই। আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিতে চাই।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে যুক্তি তুলে ধরে ফজলুর রহমান বলেন, আমার জীবন শেষ। আমার এখন ৭৮ বছর বয়স। যখন নির্বাচন হবে তখন হবে ৭৯ বছর। এর ৫ বছর পরে আমার বয়স হবে ৮৪ বা ৮৫ বছর। তখন আবার নির্বাচন করলে মানুষ সত্যিই আমাকে পাগল বলবে। কাজেই আগামী নির্বাচনই হবে আমার শেষ নির্বাচন। আমি আপনাদের সমর্থন নিয়ে জীবনের এই শেষ নির্বাচনটাই করতে চাই।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের তাঁর দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের বর্ণনা দিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, হাসিনার পতনের পর আমি বর্তমান সরকারকে জান দিয়ে সমর্থন দিয়েছি। ছাত্র-জনতাকে মাথায় তুলে বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু কিছুদিন পর দেখলাম আন্দোলনের ভেতর থেকে এমন কিছু কথা উঠতে থাকল, যা আমি মেনে নিতে পারিনি। তারা বলতেছে, তারা গণতন্ত্র বা ভোটের জন্য আন্দোলন করেনি। তারা আন্দোলন করেছে সংস্কারের জন্য। তারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে সাতচল্লিশ ও চব্বিশকে বড় করে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করতে থাকল। যখন এসব চলতে থাকল, দেশের সব মানুষ নীরব, সব মুক্তিযোদ্ধা ভয়ে তটস্থ। বিএনপির কোনো নেতা কথা বলে না- আমি তখন বললাম, এই রাজাকারের বাচ্চারা, এই আলবদরের বাচ্চারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধারা এখন জীবিত আছে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয় নাই যারা বলছো, তোমরা পাকিস্তানে যাও। এরপর থেকেই মূলত জামায়াত ও তাদের অনুসারীরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে লিপ্ত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রওশন আলী রুশো। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নীহারেন্দু দেবনাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নবী হোসেন তজু মিয়া, ফজলুর রহমানের সহধর্মিনী এডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা ও তাঁর ছেলে ব্যরিস্টার অভীক রহমান প্রমুখ।

সমাবেশের আগে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নৌকা যোগে মিছিল নিয়ে ইটনা সদরে যান। শত শত নৌকার বহর থেকে ফজলুর রহমানের পক্ষে স্লোগান দেওয়া হয় । পুরো ইটনা সদর মিছিলে মিছিলে ভরে যায়।

Comments

comments