ঢাকাশুক্রবার , ৬ অক্টোবর ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. দেশজুড়ে
  3. পজিটিভ বাংলাদেশ
  4. ফটো গ্যালারি
  5. ফিচার
  6. ভিডিও গ্যালারি
  7. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্মরণকালের রেকর্ড বৃষ্টিতে পানির তলে কিশোরগঞ্জ, ছয় ঘন্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

প্রতিবেদক
Kolom 24
অক্টোবর ৬, ২০২৩ ৬:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

টানা ভারি বর্ষণে কিশোরগঞ্জের অলিগলি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সড়ক উপচে পানি ঢুকেছে অনেকের বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে। অনেক সড়কে কোমর পর্যন্ত পানি দেখা গেছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় নির্মিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার ফারুক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় (বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) স্মরণকালের রেকর্ড ৪৫৯ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। কিশোরগঞ্জের ইতিহাসে এমন বৃষ্টিপাত আগে কখনো হয়নি।

অন্যদিকে বৃষ্টির পানিতে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটের কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া কানিকাটা এলাকার ১ কিলোমিটার রেললাইন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে ময়মনসিংহগামী নাসিরাবাদ লোকাল ট্রেন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত আটকে থাকে। বেলা তিনটার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

রেল যাত্রী কুদরত ও মুজিবুর বলেন, কুমিল্লার লাকসাম থেকে রেলগাড়ীতে উঠছি যাবো নেত্রকোনা মোহনগঞ্জ। এখানে এসে সকাল সাড়ে ৮টায় আটকা পড়েছি। প্রস্তাব পায়খানাও করতে পারিনি। গাড়ি ছেড়েছে ৩টায়। গন্তব্যে পৌছাবো কয়টায় আল্লাহই ভালো জানেন।

কিশোরগঞ্জের স্টেশন মাস্টার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, টানা বর্ষণের ১ কিলোমিটার রেললাইন পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নাসিরাবাদ ট্রেনটি শোলাকিয়া কানিকাটা এলাকার রেললাইনে আটকে ছিল। পানি নিষ্কাশন না হওয়া পর্যন্ত ময়মনসিংহ রুটে কোনো ট্রেন চলাচল করা সম্ভব ছিল না। পানি নিষ্কাশন হওয়ায় বেলা তিনটার দিকে ময়মনসিংহগামী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা নেই, যথারীতি ঢাকা রুটে ট্রেন চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ৯টা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি পড়তে থাকে। রাত সাড়ে এগারোটার মধ্যে শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলির রাস্তাঘাট হাঁটুসমান পানিতে ডুবে যায়। টানা বৃষ্টি চলে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত।

সরজমিনে দেখা যায়, গাইটাল, আলোরমেলা, খরমপট্টি, শোলাকিয়া কানিকাটা, ফিসারীরোড, বত্রিশ, নগুয়া, আখড়াবাজার, হয়বতনগর, নিউটাউন, স্টেশনরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় থৈ থৈ পানি। এসব এলাকার সড়কের কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর ছুঁই ছুঁই পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু দোকানে ও বাসায় পানি ঢুকে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সেসব বাসার বাসিন্দা ও দোকানিরা। বৃষ্টির সঙ্গে ড্রেনের পানি বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতেও ঢুকে পড়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, এলজিইডি কার্যালয়, কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ, গণপূর্ত বিভাগের সামনে থৈ থৈ পানি দেখা গেছে।

ভারী বৃষ্টির কারণে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা খুব একটা চোখে পড়েনি। এতে শহরমুখী মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। পথচারী ও যানবাহন চলাচল কমে যায়। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। এছাড়া দুটি সড়ক দুর্ঘটনার খবরও পাওয়া যায় তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও এলাকাবাসী দোষারোপ করছেন পৌর কর্তৃপক্ষকে। তারা এই জলাবদ্ধতার জন্য পৌর কতৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী বলে মনে করছেন। অনেকে বলছেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য জনগণের এই ভোগান্তি। শহরের পানিনিষ্কাশনব্যবস্থা কতটা নাজুক, সেটা শহরের চিত্র দেখলেই বোঝা যায়। বার বার এই ভোগান্তির পর টনক না নড়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অটোরিকশা চালক সাদেক বলেন, আমার বাসা গাইটাল এলাকায়। বাসার পিছনে নামাপাড়া এলাকা, ওই এলাকাতে কোমড় পর্যন্ত পানি। সকালে বৃষ্টির মধ্যে ইজিবাইক নিয়ে বের হই সড়কে হাঁটু পানি। ইজিবাইক নিয়ে যেতে পারছি না। আমরা ইজিবাইক চালিয়ে দিন আনি দিন খাই। কি হবে আমাদের।

কয়েকজন ফিশারি মালিক বলেন, আমাদের ফিশারি ডুবে গেছে। সব মাছ চলে বের হয়ে পড়েছে। আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত হয়েছে তা বলতে পারছি না।

কৃষকেরা বলেন, আমাদের খেত ফসলসহ ডুবে গেছে। সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। এই ক্ষতি কিভাবে পূরণ হবে?

কিশোরগঞ্জের পৌর মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া বলেন, পৌরসভার নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। অতিবৃষ্টির কারণেই শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে শহরের সব পানি নেমে যাবে।

Comments

comments