ঢাকাশনিবার , ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. দেশজুড়ে
  3. পজিটিভ বাংলাদেশ
  4. ফটো গ্যালারি
  5. ফিচার
  6. বিনোদন
  7. ভিডিও গ্যালারি
  8. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

১ বছর আগে বলেছিলাম, অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে, আজ দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান

প্রতিবেদক
Kolom 24
সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫ ১০:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করছে বিগত ১৬ বছর ধরে মানুষের যে অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করে এসেছে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। বিগত ১৬ বছর যে স্বৈরাচার এ দেশের মানুষের টুঁটি চেপে ধরেছিলো সেই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে আন্দোলন করেছে ঐক্যবদ্ধভাবে। মানুষ নিজের রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য। স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। বর্তমানে অর্ন্তবর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে এই প্রস্তাবগুলোর ৯০ শতাংশ প্রস্তাবনা বিএনপি আরও আড়াই বছর আগে দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন বিষয়ে মতামত উত্থাপন করেছে। বিএনপি তার মতামত দিয়েছে। কোনো কোনো বিষয়ে অন্য কারও সাথে আমাদের মতপার্থক্য আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, ভোটের অধিকার এবং বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তা এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের প্রশ্নে বিএনপির কারও সাথে কোনো আপত্তি নেই, দ্বিমত নেই। অর্থাৎ বিএনপি এই কাজগুলো করতে চায়। এই কাজগুলো যদি করতে হয় দেশের ভবিষ্যত সন্তান যারা আর যারা শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত যারা তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যা করা প্রয়োজন। দেশের নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্য যা প্রয়োজন। দেশের কিশোর যুবক যার এই মূহুর্তে কর্মসংস্থান নেই সেটি দেশে হউক সেটি বিদেশে হউক তাকে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে তাকে দক্ষ একজন শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলে তাঁর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হউক। ছোট ছোট উদ্যোক্তা যারা তাদেরকে সহযোগিতার মাধ্যমে সফল করা।

তারেক রহমান আরও বলেন, কৃষকের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো, কৃষককে সঠিক সময়ে সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। মানুষের চিকিৎসা যেটি মানুষের জন্মগত অধিকার, সেই অধিকারকে গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি মানুষ যেনো সেই সুবিধা পায়। এই কাজগুলো যদি আমাদের সম্পাদন করতে হয় তাহলে অবশ্যই জনগণের রায়ে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে জনগণের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। যে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এখন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে তাঁরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। ফেব্রুয়ারি মাসে যে নির্বাচনটি হবে এই নির্বাচনে যদি আমাদের যে ৩১ দফা, আমাদের যে কথাগুলো আপনাদের সামনে মাত্র তুলে ধরলাম এইগুলোর পক্ষে যদি জনগণের রায় নিয়ে আসতে হয় আপনারা যারা কিশোরগঞ্জের কাউন্সিলে উপস্থিত আছেন কাউন্সিলর হিসেবে আপনারা আজকে এককথায় ধানের শীষের যে কয়জন মানুষ উপস্থিত আছেন এবং সমগ্র বাংলাদেশে ধানের শীষের যে কয়জন মানুষ আছে, যে কয়জন মানুষ আজও বেঁচে আছে, আজও দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় আমাদের সামনে একটি লক্ষ্য থাকতে হবে। সেটি হচ্ছে যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরেই জেলা থানাসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সাথে ভাগে ভাগে বসেছিলাম। সেই মিটিংয়ে আমি একটা কথা বলেছিলাম স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে কিন্তু অদৃশ্য শক্তি ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। প্রায় ১ বছর আগে বলা কথা আজ ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। আজকে দেশের স্বার্থের কথা যদি আমরা বিবেচনা করি। দেশের মানুষের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার যদি প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। যা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি শুরু করে গিয়েছিলেন। যে রাজনীতি বেগম খালেদা জিয়া ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য, নারী শিক্ষাসহ গণতন্ত্রের যে অগ্রযাত্রা শুরু করে গিয়েছিলেন সেই অগ্রযাত্রাকে যদি ধরে রাখতে হয়, যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয় আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই।

তারেক রহমান আরও বলেন, আমি জানি বিশাল দল আমাদের। স্বৈরাচারের আমলে প্রায় ৫০ লাখেরও বেশি নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলাই ছিলো। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেই দেশের মোট জনসংখ্যাও এর চেয়ে কম। এতোসংখ্যক নেতাকর্মী আমাদের। থাকতেই পারে বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিভিন্ন মতামত। কিন্তু দলে যখন একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে যাবে আমাদের কাজ হচ্ছে দলের সিদ্ধান্তের পিছনে দাঁড়ানো। আপনারা কি কারও ব্যক্তিকর্মী নাকি ধানের শীষের কর্মী। আপনারা জাতীয়তাবাদী শক্তির কর্মী। জাতীয়তাবাদী শক্তি, ধানের শীষের পক্ষ থেকে যখন একটা সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে আমাদের প্রত্যেকের যারা আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং শহীদ জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক আর্দশে বিশ্বাস করি আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হবে সেই সিদ্ধান্তকে যেকোনো মূল্যে বাস্তবায়ন করা। আজকে যারা ঐক্যবদ্ধভাবে এই সম্মেলনকে সফল করলেন। আমরা যদি আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রত্যেকটা নেতাকর্মী ইস্পাতের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি তবে একটা জনরায় আমাদের পক্ষে আনতে সফল হবো।

তিনি বলেন, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। একটি হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে আমাদের। আগেই বলেছি বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু একটি পরিবারে যখন পরিবারের মুরুব্বী যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় পরিবারের সকল সদস্য সেই সিদ্ধান্তের পিছনে এসে দাঁড়িয়ে যায়। সেই সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করে। বিএনপি একটি বিশাল পরিবার। লক্ষ কোটি মানুষ এই পরিবারের সদস্য সংখ্যা। বিএনপির নীতিনির্ধারক মন্ডলী হচ্ছে এই পরিবারের সদস্য। সেই পরিবারের মুরুব্বী, বিএনপির নীতিনির্ধারক মন্ডলী যখন দলের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নিবে তখন প্রত্যেকটি সদস্যকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেই কথাটা আমি বারবার বলছি। আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে। শহীদ জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার প্রত্যেকটা মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেনো আমাদের নাম ব্যবহার করে, এই দলের নাম ব্যবহার করে, বিএনপির নাম ব্যবহার করে তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পারে। কেউ যেনো আমাদের নাম ব্যবহার করে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। এই ব্যাপারে আপনাদের প্রত্যেককে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেককে কর্তব্য পালন করতে হবে। যেনো দলের সম্পর্কে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে। আজকের কাউন্সিলে প্রার্থীদের কাছে যেমন কাউন্সিলর গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কাছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই বাংলাদেশের জনগণ। এই জনগণের সাথে আমাদের থাকতে হবে, জনগণের পাশে আমাদের থাকতে হবে জনগণকে আমাদের পাশে রাখতে হবে। যেকোনো মূল্যে আপনাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, প্রিয় কাউন্সিলরবৃন্দ আমরা আজকে এই প্রতিজ্ঞা করি যেকোনো মূল্যে দলের সিদ্ধান্তের পক্ষে আমরা একমত, ঐক্যবদ্ধ থাকবো। এই একটি শপথ এবং একই সাথে দলকে যেনো কেউ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার না করতে পারে সেই সুযোগ আমরা কাউকে দিবো না। আজকের কাউন্সিলে আমরা এই দুটি শপথ গ্রহণ করি। একই সাথে আমি এই কাউন্সিলের সফলতা কামনা করছি।

জেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রায় ৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা বিএনপির সম্মেলন। পরিচালনা করেছেন সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ, সদস্য লায়লা বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল।

এদিকে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। ১৩টি উপজেলা ও ৮ পৌর কমিটির ২ হাজার ৯০ জন কাউন্সিলরের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে মো. শরীফুল আলমকে সভাপতি ও মাজহারুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা। ওই সময় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়ে যায় সম্মেলন। পরে তিন সপ্তাহ পর কেন্দ্র থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

Comments

comments