কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নে প্রকল্পের বরাদ্দ না থাকলেও ঘর দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অনেক অতি দরিদ্র মানুষ টাকা দিলেই মিলবে ঘর- এই আশায় স্থানীয় মেম্বারকে ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
জানা গেছে, জালালপুর ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার মোছা. সাবিনা আক্তারের বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তবে আগামীতে এই ইউনিয়নে প্রকল্প আসবে কি-না তা কেউ জানে না। ‘জমি আছে ঘর নেই’- এই আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে তৃণমূল পর্যায়ের জমি আছে অথচ ঘর নির্মাণ করতে পারছে না, এমন অতি দরিদ্র পরিবারের জন্য বিনামূল্যে ঘর তৈরি করে দিচ্ছে সরকার।
আর এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। বিগত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জালালপুর ইউনিয়নে প্রকল্পের বরাদ্দ অনুযায়ী ঘর নির্মাণ করা হয়। অথচ এ বছর প্রকল্প এখনও না এলেও আগামীতে আসবে এই কথা বলে উপজেলার জালালপুর ৭,৮ ও ৯ নং মেম্বার মোছা. সাবিনা এলাকার অতি দরিদ্র মানুষকে একটি করে ঘর দেওয়ার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫-১০ হাজার এবং কারও কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী রেশমা আক্তার বলেন, ‘জালালপুর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাবিনা আমাকে ঘর দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি এখনও কোনো ঘর পাইনি। টাকাও পাইনি। আরেক ভুক্তভোগী মমতা বেগম বলেন, ‘মহিলা মেম্বার সাবিনা আমাকে ঘর দেওয়ার নাম করে ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি এখনও ঘর পাইনি। আজ-কাল বলে শুধু হয়রানি করছে। খোদেজা আক্তার বলেন, ‘ঘর পেতে মোছা. সাবিনা মেম্বারকে আমি সুদের ওপর ৫ হাজার টাকা নিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমি এখনও ঘর পাইনি। ঘরের জন্য গেলে আমাকে করোনার অযুহাত দেখিয়ে পাঠিয়ে দেয়।
অভিযুক্ত মহিলা মেম্বার মোছা. সাবিনা আক্তার বলেন, ”তার নামে সংবাদ করা হলে সাংবাদিকদের দেখে নেবেন। তিনি আরো বলেন, আমি রোস্তম চেয়ারম্যানকে খাইয়া লাইছি, আর আমিও প্রমাণ করাইয়ামনে আমি যে কি খাইছি আমার নাম সাবিনা মেম্বারনি।’
জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. গোলাপ মিয়া বলেন, ‘ এ ধরণের অভিযোগ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘ওই ইউনিয়নে ‘জমি আছে ঘর নাই’ এই প্রকল্পের কোনো বরাদ্দ এখনও আসেনি। আগামীতেও আসবে কিনা তা আমার জানা নেই। এটি সম্পূর্ণ সরকারি প্রকল্প। এখানে কাউকে টাকা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কটিয়াদী ইউএনও মোছা. আকতারুন নেছ বলেন, ‘এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Comments
comments