ঢাকামঙ্গলবার , ২৫ আগস্ট ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অস্টগ্রামের ঐতিহাসিক কুতুব শাহ মসজিদের সংস্কার কাজের উদ্বোধন

প্রতিবেদক
Kolom 24
আগস্ট ২৫, ২০২০ ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

চার’শ বছরের ঐতিহাসিক কুতুব শাহ মসজিদের সংস্কার কাজের উদ্বোধন করলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। সোমবার (২৪ আগষ্ট) প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলার অস্টগ্রামে কুতুব মসজিদের সংরক্ষণ ও সংস্কার কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়। পুরাকীর্তিটির ফলক উন্মোচনশেষে সংক্ষিপ্ত মোনাজাত করা হয়। পরে মসজিদ প্রাঙ্গণে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ হান্নান মিয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অস্ট্রগ্রাম উপজেলার চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম জেমস, অস্ট্রগ্রাম ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মস্তোফা আরিফ খান প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রগ্রাম উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ রফিকুল আলম, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক রাখী রায়, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ ছাদেকুজ্জামান, সদ্য এলপিআরে যাওয়া প্রকৌশলী জাকির হোসেন চৌধুরী, সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আহমেদ, মোঃ মোতাহের হোসেন, আর্কিটেক্ট জুবায়ের, সাইট পরিচারক আমিনুল হকসহ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও হযরত কুতুব শাহ রহ. এর ভক্তগণ ও স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রসঙ্গত চার’শ বছরের ঐতিহাসিক কুতুব শাহ মসজিদপ্রায় সাড়ে চার’শ বছরের পুরোনো পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট কুতুব শাহ মসজিদটি টিকে আছে। কিশোরগঞ্জের গভীর হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম সদরে পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির অবস্থান। দেশের পুরাকীর্তিগুলোর অন্যতম নিদর্শন কুতুব শাহ মসজিদটির ইতিহাস ঐতিহ্য প্রশিদ্ধ। প্রায় ৭৩ শতাংশ ভূমির উপর মসজিদটির অবস্থান। পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটিতে কুতুব শাহের মাজার ও আরও পাঁচটি মাজারে কোনো শিলালিপি বা তারিখ পাওয়া যায়নি।

বিশিষ্ট লোক ঐতিহ্য সংগ্রহ মোঃ সাইদুর সম্পাদিত কিশোরগঞ্জ গ্রন্থে এ নির্মাণশৈলী বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, এতে সুলতানী আমলের বৈশিষ্ট্য থাকলেও মোঘল প্রভাবই বেশী। অধ্যাপক ধানির মতে, মসজিদটি ষোড়শ শতকের শেষার্ধে নির্মিত হয়েছিল।

তবে এ ক্ষেত্রে শ্রদ্ধেয় আবুল কালাম মোহাম্মদ জাকারিয়ার বিশ্লেন প্রণিধানযোগ্য। তিনি লিখেছেন ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ অঞ্চলে পাঠান সম্রাট শের শাহর রাজ্যভূক্ত হয়। পাঠান রাজত্বের শেষে ঈশা খাঁ মসনদ-ই-আলা এই অঞ্চলের অধিপতি ছিলেন ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এই অঞ্চলের মোঘল অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় সুবেদার ইসলাম খানের আমলে ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। এতে দেখা যাচ্ছে যে, মুঘল অধিকারের পরে যদি এ মসজিদ নির্মিত হয়ে থাকে, তবে তা সপ্তদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকের আগে হতে পারে না। আর ঈশা খাঁর আমালে যদি এ মসজিদ নির্মিত হয়ে থাকে তবে তা ষোড়শ শতাব্দীর শেষ ভাগে হতে পারে। ঈশা খাঁর আমলে নির্মিত হলে এত মোঘল প্রভাব থাকার কথা নয়। সঙ্গত কারণে তাই ধারনা করা যায় যে, মসজিদটি সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম পাদে নির্মিত হয়েছিল।

মসজিদে পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে। এর ভিতর মাজের গস্বুজটি বৃহৎ। মসজিদটি আয়তকার। বাইরের দিক থেকে দৈর্ঘ্যে ৪৫ ফুট। চার কোণে চারটি আট কোণাকার বুরুজ আছে। এগুলো মোল্ডিং দ্বারা শোভিত এবং চূড়া ছোট গম্বুজ বিশিষ্ট। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো মসজিদের কার্নিশগুলো বেশ বাঁকানো, যা সহজেই দৃষ্টি আকর্ষন করে।

পূর্ব দেয়ালে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিন দেয়ালে দুটি করে প্রবেশ দ্বার রয়েছে। পূবের্র তিনটির প্রবেশ দ্বারের মধ্যে মাঝেরটি অপেক্ষাকৃত বড়। পূর্ব ও পশ্চিম দেয়াল প্রায় পাঁচফুট এবং উত্তর ও দক্ষিন দেয়াল প্রায় ৪.৫ ফুট প্রশস্থ। দেয়ালের বাইরের দিকে পোড়ামাটির চিত্র ফলকের অলংকরণ ছিল। যার সামান্য নমুনা আজও অবিশিষ্ট রয়েছে। পূর্বদিকের দেয়াল দুই সারি প্যানেল দ্বারা শোভিত। প্রবেশদ্বারগুলো অর্ধবৃত্তাকারের খিলানের সাহায্যে নির্মিত। কালের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে ব্যাতিক্রমধর্মী এই পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট আয়তকার মসজিদটি অনেকটাই শীর্ণ অবস্থায় টিকে আছে। মসজিদটির সংস্কার করা হবে জেনে এলাকাবাসী আন্দোলিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে।

Comments

comments