ঢাকারবিবার , ৬ নভেম্বর ২০২২
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে পরিবহন খাত মালিক সিন্ডিকেটে জিম্মি যাত্রী

প্রতিবেদক
Kolom 24
নভেম্বর ৬, ২০২২ ১:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জে বাসমালিকদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি যাত্রীরা। রাজনৈতিক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠা এই সিন্ডিকেট দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ার কারণে এ খাতে নিয়মনীতি কার্যকর করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ-সায়েদাবাদ (ঢাকা) রুটে যাতায়াত করে অনন্যা সুপার ও যাতায়াত পরিবহন। কিশোরগঞ্জ থেকে মহাখালী যায় অনন্যা পরিবহন, অনন্যা ক্ল্যাসিক ও উজানভাটি। এসব পরিবহনমালিকের সিন্ডিকেটের কারণে অন্য কোনো বাস চালু করার অনুমতি চাইলে মালিক সমিতি অনুমোদন দেয় না। জেলায় বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি উন্নত মানের বাস সার্ভিস চালু করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির বাধার কারণে বাস সার্ভিস চালু করা যাচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই নিম্নমানের বাস ও সেবায় ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের।

যাত্রীদের অভিযোগ, এসব বাস ‘মান্ধাতার আমলের’, ‘মুড়ির টিন’। বাসের সিটগুলো এতটাই সংকীর্ণ যে বসতে গেলে সিটের সঙ্গে হাঁটু আটকে যায়। সেই সঙ্গে রয়েছে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ। চালকেরাও বেপরোয়া। কোনো যাত্রী হাত তুললেই যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যায়। এর ফলে সময়মতো গাড়ি গন্তব্যে পৌঁছায় না। স্বাভাবিক যাতায়াতের পথ সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা হলেও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো এবং বাস দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে সাত-আট ঘণ্টা সময় নিচ্ছে বাসগুলো। এ ছাড়া চালকের সহযোগীদের দুর্ব্যবহারের কারণে প্রতিদিন দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।

পৌর বাসিন্দা রাজন বলেন, ‘সায়েদাবাদ থেকে সাড়ে আট ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জে আসছি। যতক্ষণ বাসে ছিলাম, ততক্ষণ যেন জাহান্নামে ছিলাম। এ যন্ত্রণা থেকে কবে মুক্তি পাব?’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে চার শ বাস ও মিনিবাস কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এর মধ্যে ফিটনেসবিহীন বাসের সংখ্যা ২৭ এবং মিনিবাসের সংখ্যা ১৮।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মালিকানাধীন বাস কোম্পানিগুলোই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে। উপজেলার সড়ক পরিবহনেও তাদের তাণ্ডব। রাজনৈতিক নেতাদের তৎপরতায় মিলছে যানবাহনের সহজ রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ও রুট পারমিট। শত শত ভাঙাচোরা বাস এখনো চলছে।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের দাবি, একরামপুর ও গাইটাল থেকে কাপাসিয়া হয়ে ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনালের দূরত্ব ১১০-১১২ কিলোমিটার। তবে বাসমালিকেরা ভাড়া রাখছেন ১৩০ কিলোমিটার ধরে।

গাইটাল বাসস্ট্যান্ড থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার হলেও বাসমালিকদের দাবি ১৫৩ কিলোমিটার।

ব্যবসায়ী সৈয়দ ইয়াছিন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ-ঢাকার ভাড়া নির্ধারিত হয় যে চার্টের ওপর ভিত্তি করে, সেখানেই রয়েছে ঘাপলা। অদ্ভুত বিষয় হলো, স্থানীয় প্রশাসন ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এটা সংশোধন বা এই বিতর্কের কোনো সমাধান না করে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে।’

জেলা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী মীর সাত্তার উদ্দিন বলেন, পরিবহন খাত মালিক সমিতির কাছে জিম্মি। বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি উন্নত মানের বাস সার্ভিস চালু করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও সমিতির বাধার কারণে তা হচ্ছে না।

আন্তজেলা গাইটাল বাস টার্মিনালের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাজিব আহমেদ আসাদ বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত ভাড়া ৩৬০ টাকা ও মহাখালী ৩২০ টাকা হলেও গাড়ির মান ভালো নয়। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া ১৫০ টাকা। আমরা চাই উন্নত মানের বাস সার্ভিস চালু হোক। সেবার মান বাড়ুক।’

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মানিক বলেন, ‘যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চলছে। আশা করি খুব শিগগির মান বাড়বে।’

বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। জনবলসংকটের কারণে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়।’

Comments

comments