কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং তার ছেলে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরালের মুখমণ্ডলে কালো রঙ দিয়ে বিকৃত করেছে দুর্বৃত্তরা। কিশোরগঞ্জের একটি ফেইসবুক গ্রুপে সোমবার (০২ জানুয়ারি) সকালে এ বিষয়টি পোস্ট করলে মূহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
জানা যায়, রোববার (০১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতের কোনো এক সময় শহরের আখড়া বাজার ব্রিজ সংলগ্ন সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল-আমিন হোসাইন, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ, পৌর মেয়র পারভেজ মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এর আগে ২০২১ সালের ৩০ জুলাই একই স্থানে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরালটি ভাংচুর করা হয়। ওই ঘটনায় ইটনা উপজেলার রায়টুটি এলাকার পারভেজ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে সিসিটিভি ক্যামেরাটি এখন অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, কি বলবো ভাষা হারিয়ে ফেলছি। এই দুজন মানুষ আওয়ামী লীগের না কিশোরগঞ্জেরও না এরা আমাদের বাংলাদেশের রত্ন, এটা দুঃখজনক। ম্যুরালের মুখমণ্ডলে কালো রঙ দিয়ে বিকৃত করা কিসের ইঙ্গিত? ধিক্কার জানাই তাদের যারা ইতিহাস মুছে দেয়ার পায়তারা করছে। এখনেই শক্ত হাতে তাদের প্রতিহত না করতে পারলে সামনে আরও ভয়ংকর কিছু হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে বা যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশকে বলা হয়েছে। পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা যায় কিনা মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়াকে বলা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। আমরা এ বিষয়ে তৎপর রয়েছি। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, আমি এ হীন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবেই হবে। এর আগেও গত বছর আশরাফ ভাইয়ের ম্যুরালে আঘাত করা হয়েছে। তার সঠিক বিচার আমরা পাইনি।
উল্লেখ্য যে, আখড়া বাজার ব্রিজ সংলগ্ন নরসুন্দা নদীর তীরে সৈয়দ নজরুল ইসলামের ম্যুরালটি নির্মিত হয় জেলা পরিষদের অর্থায়নে। ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট ম্যুরালটি উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। অন্যদিকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরালটি নির্মাণ করে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া।
Comments
comments