ঢাকাশুক্রবার , ৬ জানুয়ারি ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জের হাওরে মাছ উৎপাদন বেড়েছে

প্রতিবেদক
Kolom 24
জানুয়ারি ৬, ২০২৩ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে প্রচুর জলাশয় থাকায় অনেক মাছ উৎপাদিত হয়। এ কারণে এখানকার মাছ উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী। জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে জেলায় মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০ হাজার টন। এর বিপরীতে উৎপাদিত হয়েছে ৮৩ হাজার টন। এ ছাড়া চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ হাজার টন। উৎপাদিত হয়েছে ৮৫ হাজার টন।

এদিকে জেলার মোট উৎপাদনের পাশাপাশি হাওরের মাছ উৎপাদন বেড়েছে। সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদিত হয়েছে ৫০ হাজার টন। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদিত হয়েছে ৫১ হাজার টন। হাওর অঞ্চলে মাছের উৎপাদন বাড়ার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা মৎস্য কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মাছের চাহিদার প্রায় ৫ ভাগ পূরণ হয় এখানকার হাওর থেকে। এ জন্য বাংলাদেশের অন্যতম মৎস্যভান্ডারও বলা হয়ে থাকে কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলকে।
এদিকে জেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৩ হাজার টন চাষের মাছ উৎপাদিত হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার টনে।

সরকারি ও বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী, জেলায় পুকুর-দিঘি রয়েছে ৩৩ হাজার ৫২৮টি, খাল ১৪৭, নদী ২৬, বিল ৩৪৭ ও ৫৪টি হাওর রয়েছে। এ ছাড়া বিল নার্সারির সংখ্যা ২২ এবং অভয়াশ্রম রয়েছে ১১টি।

জেলা মৎস্য কার্যালয় জানায়, গুণগত পোনার প্রাপ্যতার অভাব, উত্তম মাছ চাষ অনুশীলন বা ব্যবস্থাপনা না করা, বাণিজ্যিক খামারের সংখ্যা কম, অপরিকল্পিত বাঁধ তৈরি, নির্বিচারে মৎস্য আহরণ, মৎস্য সংরক্ষণ আইন না মানা, অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, মৎস্য আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মৎস্য কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা না থাকায় উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এসব বাধা অতিক্রম করতে পারলে হাওর অঞ্চল তথা জেলায় মাছের মোট উৎপাদন আরও বাড়বে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৬ সালে মৎস্য উৎপাদনে প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্ত অগ্রযাত্রা মৎস্য চাষি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম বলেন, মৎস্যসম্পদকে রক্ষার জন্য প্রচুর অভয়াশ্রম দরকার। কিশোরগঞ্জে ১১টি অভয়াশ্রম আছে। যদি প্রচুর পরিমাণে অভয়াশ্রম করা হয়, তবে বিলুপ্তপ্রায় মাছ ফিরে আসবে।

খাইরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের কিশোরগঞ্জ মৎস্য উৎপাদনে দেশে অন্যতম হলেও এখানে মাছের চিকিৎসার জন্য কোনো ল্যাব নেই। অনেক জেলেরা ডিমওয়ালা মাছ শিকার করে। তারা খুবই ধূর্ত। তাদের রুখতে পারলে আমরা আরও এগিয়ে যাব।’

হাওরে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা ও তীরবর্তী মানুষের দাবি, মাছের অভয়াশ্রমের সংখ্যা বাড়ালে হাওরতীরের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের পাশাপাশি গোটা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তবে তার আগে হাওরকে অসাধুচক্রের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

মাছচাষিদের অভিযোগ, মৎস্য সমবায় সমিতিগুলোতে প্রতীকী নাম ব্যবহার করে এক শ্রেণির অসাধু লোক জলমহাল ইজারা নিয়ে আড়ালে জলমহালের সুবিধা ভোগ করে। টাকার বিনিময়ে জলমহালের মালিক বনে যায়। এতে প্রকৃত জেলেরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হন। এ কারণে মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রকৃত জেলেদের মধ্যে জলমহাল ইজারা দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

এর পাশাপাশি বৈশাখ থেকে আষাঢ়—এই তিন মাস প্রতি বছর মাছ ধরা বন্ধ রাখলে মাছের বংশবিস্তার অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে মৎস্য আইনের প্রয়োগ ও সেটির জোরদার করা এবং মুরগির বিষ্ঠা, গোবর ও কম্পোস্ট সার ব্যবহার প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান তাঁরা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, কিশোরগঞ্জে উৎপাদিত মাছ চাহিদার তুলনায় উদ্বৃত্ত থাকে। দেশের মৎস্য চাহিদা পূরণে কিশোরগঞ্জের ভূমিকা রয়েছে। প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মৎস্য আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অভয়াশ্রম স্থাপন করাটা জরুরি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সচেতনতা বাড়ানোর জন্য চাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। জলমহাল প্রকৃত জেলেরা অর্থাৎ নিবন্ধিত জেলেরা পাচ্ছে কি না, তা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’

Comments

comments