ঢাকারবিবার , ২৯ জানুয়ারি ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু; মূল অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

প্রতিবেদক
Kolom 24
জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ ১২:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জের আল-হেরা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি রুপালী আক্তারের (২২) মৃত্যুর ঘটনায় এ পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও মূল অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। ঘটনার ৬ দিন পার হলেও মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তারে পুলিশের তোরজোর নেই অথচ তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে মৃত রুপালী আক্তারের পরিবার বলছে, আমরা সঠিক বিচার পাবো কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছি, কারণ ঘটনার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামি চিকিৎসক আক্তার নাহার জ্যোতি (৩০), চিকিৎসক নাজমুল হাসান সোহেল (৪০), চিকিৎসক মাহমুদাসহ ক্লিনিক মালিকরা এখনো গ্রেপ্তার হচ্ছে না। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অন্যান্য ঘটনার মতো প্রভাবশালী মহলের চাপে আমাদের রুপালীর মৃত্যুর ঘটনাও কি ধামাচাপা পড়ে যাবে? ঘটনার পর যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে তারা এখনো তদন্তই করেননি। এটা কি আসামিদের বাঁচাতে আমাদের সাথে প্রহসন নয়।

জানা যায়, রোববার (২২ জানুয়ারি) রাতে সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের আল-হেরা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় রুপালী আক্তার নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টা পর স্বজনেরা জানতে পারেন, মৃত্যুর পর প্রসূতির লাশ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাঠে ফেলে যায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এরপর খবর পেয়ে ওই হাসপাতালের মাঠ থেকে প্রসূতি রুপালীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে সিভিল সার্জন মো. সাইফুল ইসলাম আল হেরা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড হসপিটালটি অনুমোদনহীন থাকায় হাসপাতালটিকে সিলগালা করে দেন এবং ঘটনাটির প্রকৃত কারণ জানতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক নাজমুল করিমকে সভাপতি করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেন। অন্যদিকে সোমবার রাতেই রুপালীর মামা শ্বশুর কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় ১০ জনের নামোল্লেখ করে মামলা দায়ের করলে এজহারনামীয় আসামি অ্যাম্বুলেন্স চালক মোঃ জুয়েলসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মৃত প্রসূতি রুপালীর স্বামী মো. পলিন ইসলাম বলেন, ঘটনার ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তারা কি আইনের আওতায় আসবে না, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বেঁচে যাবে। আমি ২০১৭ সালে সৌদি আরব যাই। গত ৫ বছরে কখনও হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাইনি। আমি যেমন আমার রাষ্ট্রের সাথে বেইমানি করিনি আমার রাষ্ট্রও যেন আমার সাথে বেইমানি না করে। আমি রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাই। এ মামলার আসামিরা মামলার বাদী আমার মামা মোঃ শরীফ মিয়াকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন মিমাংসা করার জন্য। যদি আমরা মিমাংসা না করি তবে এ মামলাই তাদের কিছু হবে না সবকিছু প্রভাবশালী মহল শেষ করে দিবে। মিমাংসা করলেতো কিছু টাকা পয়সা পাবো আর না করলে বিচারতো দূরের কথা মামলাও থাকবে না কিছুই পাবো না।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি আশরাফ আলী সোহান বলেন, এতো বড় একটি ঘটনার পরও পুলিশ মূল অভিযুক্তদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি এটা দুঃখ জনক৷ আশংকা করছি ক্ষমতা এবং টাকার কাছে এই ন্যাক্কারজনক অপরাধ ধামাচাপা পড়ে যায় কিনা ৷ আমরা চাই অতিশীঘ্রই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হউক৷ যেনো মানুষের মৌলিক অধিকার চিকিৎসা নিয়ে এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস না পায়।

তদন্ত কমিটির সভাপতি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক নাজমুল করিম বলেন, আমরা এখনো তদন্ত করি নাই। আগামী সোমবার (৩০ জানুয়ারি) তদন্ত করবো।

কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ভিসেরা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়া যাবে না।

ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের সভাপতি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অধ্যক্ষ রবীন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, জটিল মামলাগুলোর আসামিদের পুলিশ খুব সহজেই গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়। আর এই মামলার মূল অভিযুক্তদের পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হচ্ছে না এটা ভাববার বিষয়। তাহলে কি পুলিশ প্রশাসন কোনো প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না? খুবই দুঃখজনক।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, এ মামলায় দুইজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। আমি আশাবাদী অন্য আসামিদের খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।

Comments

comments