কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে রাব্বি (১৭) নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (০৩ মার্চ) রাত সোয়া এগারোটার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। রাব্বি বাজিতপুর উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়নের পূর্বহাটি গ্রামের মিরজ আলীর ছেলে। অন্যদিকে রাব্বির পরিবারের সদস্যরা বলছেন, যদি চুরি করার চেষ্টা করেই থাকে তবে পুলিশে দিত, মারল কেনো। দেশে কি আইন নাই?
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে রাব্বি ও তার দুই সঙ্গী কুলিয়ারচর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে কুলিয়ারচর উপজেলার গাইলকাটা এলাকার সারোয়ার আলমের মোটরসাইকেলের লক ভাঙার চেষ্টা করছিল। এ সময় সারোয়ার আলমসহ ৩ ব্যাক্তি বিষয়টি দেখে মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে তাদের ধরার চেষ্টা করে। রাব্বি ও তার সঙ্গীরা পালানোর চেষ্টা করলে সারোয়ারের নেতৃত্বে দৌড়িয়ে রাব্বিকে উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে ধরে ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু করে এবং মাথায় আঘাত করে। এ সময় রাব্বির সাথে থাকা সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত রাব্বিকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাব্বিকে মৃত ঘোষনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি বাসা থেকে বের হয়ে দেখি আহত ছেলেটি রাস্তায় পড়ে গেছে। আমি ছেলেটিকে পালিয়ে যেতে বলি। কিন্তু এতো বেশি মাইর খাইছে যে ছেলেটি পালাতে পারেনি। পরে এলাকাবাসী এসে ছেলেটিকে উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
রাব্বির বড় ভাই মোঃ আল আমিন বলেন, আমার ভাই পরিবারে অর্থনৈতিক যোগান দিতে ৪-৫ বছর যাবত বিভাটেক অটো রিকশা চালায়। আমার ভাই চুরি করার চেষ্টা যদি করেই থাকতো তবে পুলিশে খবর দিয়ে ধরিয়ে দিত। দেশেতো আইন আছে। কেনো এভাবে মারল পুলিশে না দিয়ে। আমার ভাইয়ের সারাটা শরীরে আঘাতের চিহ্ন।
বাজিতপুর উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ মইন উদ্দিন বলেন, আমার জানামতে রাব্বি মোটরসাইকেল চুরি কখনো করেনি। আমরা বিচার চাই।
রাব্বির বাবা মিরজ আলী বলেন, তারা কেনো এমন করল, কি কারণে করল? আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
মোটরসাইকেলের মালিক সারোয়ার আলমের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আদনান আখতার বলেন, নিহতের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পরে আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments
comments