ঢাকারবিবার , ৩০ এপ্রিল ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে নিজ মেয়েকে হত্যার দায়ে মায়ের ফাঁসি

প্রতিবেদক
Kolom 24
এপ্রিল ৩০, ২০২৩ ২:২৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জে শিউলী আক্তার মায়া (১০) নামের নিজ মেয়েকে হত্যার দায়ে মাকে ফাঁসি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ১ টায় কিশোরগঞ্জের নারী ও নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পর আসামির মা মনোয়ারা আদালতের বারান্দায় লুটিয়ে পড়েন। অন্যদিকে একই সময় আসামির বাবা তার ছেলেকে ফোন দিয়ে বলেন, “তোর বোনের ফাঁসি হইছে। সবাইকে জানিয়ে দে।”

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মো.আছমা আক্তার (৩৬) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সুরুজ মিয়ার মেয়ে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এম.এ আফজল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আছমা আক্তার ২০০৮ সালে নাটোর জেলার আশরাফ উদ্দিনের সাথে প্রেম করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের ঘরে ২০১০ সালে শিউলী আক্তার মায়া নামে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৩ সালে আছমা আক্তারের স্বামী আশরাফ উদ্দিন ঢাকা মহানগরীর মহাখালী এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়। পরে আছমা আক্তার তার মেয়ে শিউলী আক্তার মায়াকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই বসবাস করে। ২০১৭ সালে পুনরায় আছমা আক্তারের গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকার আব্দুল কাদেরের সাথে বিবাহ হয়। দ্বিতীয় বিয়ের পরও আছমা আক্তার তার মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। নিহত শিউলি আক্তার মায়া স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনে ৩য় শ্রেণিতে লেখাপড়া করতেন। এদিকে আছমা আক্তারের স্বামী আঃ কাদের ১০ থেকে ১৫ দিন পরপর শ্বশুর বাড়ি এসে ৩ থেকে ৪ দিন থাকতেন এবং আছমা আক্তার তার মেয়েকে নিয়ে মাঝে মাঝে আব্দুল কাদেরের বাড়িতে বেড়াতে যেত। তাদের সংসারে বিভিন্ন বিষয় নিয়া ঝগড়া ঝাটি হত। এ কারণে ২ বছর আব্দুল কাদের শ্বশুর বাড়িতে আসেনি। তবে আছমা আক্তার তার মেয়েকে নিয়া স্বামীর বাড়ীতে আসা যাওয়া করত। হঠাৎ একদিন আছমা আক্তার স্বামীর বাড়ি থেকে এসে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথাবার্তা বন্ধ করে দেন। ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তার ভাইয়ের শ্বাশুড়ী তাদের বাড়িতে আসলে ঘরে ঢুকতে বাধা দেন আছমা। এ নিয়েও পরিবারের সদস্যদের সাথে মনোমালিন্য হয়। পরদিন সকালে তার ১০ বছর বয়সী শিউলী আক্তার মায়াকে স্কুল থেকে ডেকে এনে জোরপূর্বক ইদুঁর মারার একটি ট্যাবলেট খাওয়ান। পরে তার মা মনোয়ারা বেগম বাধা দিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে মোবাইল এয়ারফোনের তার পেঁচিয়ে মেয়ে শিউলীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় এদিন রাতেই তার শিউলীর নানা সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে মেয়ে আছমাকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান তদন্ত শেষে আছমাকে একমাত্র আসামি হিসেবে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর পিপি আইনজীবী এম এ আফজাল এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সাইফুল ইসলাম পলাশ।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আছমা আক্তারের বাবা মামলার বাদী মো. সুরুজ মিয়া বলেন, আমার নাতনীকে হত্যার দায়ে আমার মেয়ের ফাঁসি হয়েছে। আমি এ বিচারে সন্তুষ্ট।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এম এ আফজাল বলেন, ‘এ রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। মানুষের আদালতের রায়ে আস্থা বাড়বে।’

Comments

comments