করিমগঞ্জে পাথর দিয়ে চালকের মাথা থেঁতলে হত্যা করে অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সেলিম (৩৯) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ মে) রাতে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন পাগাড় এলাকার ফকির মার্কেট থেকে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সেলিম সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের পাটধা কাঁঠালিয়া গ্রামের মো: হাবিবুর রহমানের ছেলে।
এর আগে গত সোমবার (২২ মে) সকালে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সড়কের করিমগঞ্জ-নিকলী সংযোগ সেতুর নিচ থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক শরীফের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত অটোরিকশা চালক শরীফ মিয়া (২৫) করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের ইন্দা গ্রামের মতিউর রহমান ওরফে মতি মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২৪ মে) দুপুরে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এক বছর আগে নতুন বউ নিয়ে সংসার শুরু করেন শরীফ। শরীফের আর্থিক অস্বচ্ছলতা দেখে গত রোববার (২১ মে) তার দুলাভাই আক্কাছ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে লতিবপুর বাজার থেকে একটি পুরাতন অটোরিকশা কিনে দেন। ওই অটো রিকশাটি করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর এলাকার খয়রাতের মোড়ের একটি গ্যারেজ থেকে মেরামত কাজ শেষ করে বিকেলে ভাড়ার উদ্দেশ্যে বের হন শরীফ। এরপর আর রাতে বাড়ি ফেরেননি। পরে সোমবার (২২ মে) সকালে করিমগঞ্জ উপজেলার রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সড়কের করিমগঞ্জ-নিকলী সংযোগ সেতুর নিচ থেকে পাথর ও সিমেন্টের মোল্ডের টুকরো দিয়ে মাথায় চাপা দেয়া মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে শরীফের মরদেহ উদ্ধার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন জানান, রোববার রাতের কোনো এক সময় চালক শরীফ মিয়াকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলে রেখে তার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গত সোমবার (২২ মে) নিহতের বাবা মতিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর পরই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে পুলিশ। পরে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সেলিমের বরাত দিয়ে তিনি জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে যাত্রীবেশে ৪ জন অটোরিকশায় উঠে কৌশলে নীরব ও নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে শরীফকে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করে৷ পরে অটোরিকশাটি সদর উপজেলার বিন্নাটি এলাকার একটি গ্যারেজে চার্জ দেয়। এরপর তারা অটোরিকশাটি নিয়ে গাজীপুর চলে যায়। সেলিমকে গ্রেপ্তারের পর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী টঙ্গী পূর্ব থানাধীন পাগাড় এলাকার একটি গ্যারেজ হতে ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। এ হত্যার সাথে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
তিনি আরও জানান, আসামি সেলিমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Comments
comments