ঢাকাবুধবার , ১৯ জুলাই ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভৈরবে চুক্তি অনুযায়ী টাকা পেল ডোম, অভিযুক্ত হলেন পুলিশ কর্মকর্তা

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুলাই ১৯, ২০২৩ ৬:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সম্প্রতি ভৈরবে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিনেই ভৈরব থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন সোনিয়ার বাবা আক্তার মিয়া। এর কিছুদিন পর মৃত সোনিয়ার বাবা আক্তার মিয়া ভৈরব বাজারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক মাজাহার মেয়ের লাশ আনতে তার কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং মাজহারকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে তিনি লাশ গ্রহণ করেন। তবে মাজাহারের দাবি, আক্তার মিয়া মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন সাংবাদিকদের। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ডোম জিল্লু মিয়া টাকা নিয়েছেন সোনিয়ার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে। ওই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কোনো টাকা নেননি।

পুলিশ জানায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার জগমোহনপুর গ্রামের আক্তার মিয়ার মেয়ে সোনিয়া আক্তারের প্রায় ১২ বছর আগে একই উপজেলার কালিপুর মধ্যপাড়ার মুর্শিদ মিয়ার ছেলে আরমান মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। সংসার জীবনে সোনিয়া তিন সন্তানের মা। কিন্তু গত শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কালিপুর গ্রামে স্বামী আরমান মিয়ার বাড়ির কাছে একটি বরুন গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূ সোনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিনেই ভৈরব থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন সোনিয়ার বাবা আক্তার মিয়া।

এদিকে ভৈরব পৌরসভার ১২ নং ওয়র্ডের কাউন্সিলর ইব্রাহিম বলেন, পুলিশ সোনিয়ার মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করছে। সোনিয়ার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। গলায় সোনিয়ার ওড়না প্যাচানো ছিল। আর সোনিয়ার স্বামী বিভাটেক অটো রিকশা চালক৷

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আক্তার মিয়ার সাথে তিনি বলেন, আমার মেয়ে সোনিয়ার লাশ যখন কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় তখন সোনিয়ার খালা ৬ হাজার টাকা দেন। পরে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে লাশ নিয়ে গেলে বিকাশে আরও ৪ হাজার টাকা পাঠাই। রাত ১০টা-১১টা বেজে যাবার পরও যখন মেয়ের লাশ বাড়িতে নিয়ে যেতে পারছিলাম না তখন উপপরিদর্শক মাজহারের কাছে ১৪ হাজার টাকা দিয়ে মেয়ের লাশ বাড়িতে নিয়ে যাই।

অভিযুক্ত উপপরিদর্শক মাজহার বলেন, মৃত সোনিয়ার খালা এবং খালাতো ভাই ভৈরবের ডোম জিল্লু মিয়ার সাথে কথা বলে লাশ আনা নেয়ার বিষয়ে সবকিছু ফাইনাল করে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। গত শুক্রবার (৭ জুলাই) সোনিয়ার লাশ উদ্ধার করার পর একটি অপমৃত্যু মামলা রজু হয়। পরদিন শনিবার (০৮ জুলাই) রাতে মৃত সোনিয়ার বাবা আক্তার মিয়া ও আগানগর ইউপি পরিষদের মেম্বার মো. জাহাঙ্গীর আলম থানায় এসে আমাকে হত্যা মামলা রজু করতে বলেন। এ সময় আমি তাদের বলি আপনারা এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এর সাথে কথা বলেন।

মাজহার বলেন, পরে আগানগর ইউপি পরিষদের মেম্বার মো. জাহাঙ্গীর আলম পুলিশের এক কর্মকর্তাকে ফোন দেন এবং আমাকে কথা বলতে বলেন। ওই কর্মকর্তা আমাকে মামলা করতে বলেন। আমি ওই কর্মকর্তাকে বলি, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এর সাথে এ বিষয়ে কথা বলেন। এরপর ওই কর্মকর্তা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। আমি তখন ফোনটি ইউপি সদস্যের কাছে একটু জোরে দেই। যেহেতু ফোনটি আমার না তাই তাকে সরিও বলি।

এসআই মাজহার আরও বলেন, পরিচয় গোপন করে ওই কর্মকর্তা রাতে থানায় আসে। পরে ওই কর্মকর্তার পরিচয় পাওয়া যায়। উনি থানা থেকে বের হয়ে যাবার আগে আমাকে দেখে নিবেন এই কথাটা বলে যান। এর পরেই আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়। অথচ আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়।

এ বিষয়ে ডোম জিল্লু মিয়া বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মৃতের স্বজনদের থেকে যে টাকা পাই তা দিয়ে আমার সংসার চলে। ১৬ হাজার টাকায় মৃত সোনিয়ার খালা আমার সাথে চুক্তি করে। কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে যাবার আগে ৬ হাজার টাকা দেয়। ওইখান থেকে এসে ৮ হাজার টাকা নেই। ১৬ হাজারের চুক্তির মধ্যে এই ১৪ হাজার টাকা নিয়েছি। দুই হাজার টাকা ছাড় দিয়েছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ আসা যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ৫ হাজার টাকা। আর ৯ হাজার টাকা তিনজন ডোম ৩ হাজার টাকা করে নিয়েছি। এসব টাকা আমি মহিলার কাছ থেকে নিয়েছি কোন পুরুষ আমাকে টাকা দেয়নি।

এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক খায়রুল আকাশ বলেন, আমার গাড়ি থানার বাইরে ছিল। আমি ওইদিন ভাড়াও কম পেয়েছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছিলাম আর ভাড়া পেয়েছি ৫ হাজার। থানা চত্বরে মৃতের পরিবারের সাথে যার চুক্তি হয়েছিলো সে কথা বলছিলো। তারা জোরে জোরে কথা বলছিলো। পরে পুলিশ এসে তাদের বাইরে গিয়ে কথা বলতে বলেন।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোস্তাক সরকার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন। এছাড়া এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলেছেন তাঁরা।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, এ ঘটনায় টাকা লেনদেনের সাথে পুলিশের কোন ধরণের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

Comments

comments