কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি শরীফুল আলমকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (০৪ নভেম্বর) সকালে ভৈরব উপজেলার কমলপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত ভৈরব পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, শনিবার (০৪ নভেম্বর) ভোর ৩টার দিকে ঢাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ভৈরব পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কমলপুরস্থ মাজহারুল ইসলামের বাসা ঘেরাও করে। পরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শরীফুল আলমসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে করে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, ভৈরব উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল হক ও নূরুজ্জামান, শরীফুল আলমের ব্যক্তিগত গাড়িচালক রতন মিয়া ও যে বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় সেই বাসার মালিক মাজহারুল ইসলাম।
এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমসহ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ভৈরবে আগামীকাল রোববার (০৫ নভেম্বর) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ভৈরব পৌর বিএনপি।
এর আগে বিএনপির ডাকা তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে ছয়সূতি বাজার এলাকায় টহল পুলিশ সদস্যরা পৌঁছালে বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাধে। তারা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে। এ সময় দা, কুড়াল, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের আক্রমণের কারণে একপর্যায়ে পুলিশ স্থানীয় একটি বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে ব্যাকআপ পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৩৫ রাউন্ড বুলেট ছোড়া হয়।
এ ঘটনার পর কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল মিল্লাত দাবি করেন পুলিশের গুলিতে রেফায়েত উল্লাহ ও বিল্লাল মিয়া নামে দুইজন নেতা নিহত হন। তবে কুলিয়ারচর থানা পুলিশ বলছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের নিজেদের ছোড়া গুলিতেই কেফায়েত উল্লাহ মারা যান। অন্যদিকে মৃত বিল্লালের সুরতহাল প্রতিবেদনে তার যে ইনজুরি দেখা গিয়েছে, তাতে প্রতীয়মান হয় এটি কোনো গুলির ইনজুরি নয়। অন্তর্ঘাতমূলক কোনো কিছু হতে পারে। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমকে প্রধান আসামি করে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের ছয়সূতি বাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে ওই মামলা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের ছয়সূতি বাজার এলাকায় গত মঙ্গলবার সকালে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলা হয়। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমসহ ৪৩ জনের নামোল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ১ হাজার ৬০০ জনকে। একই আসামিদের বিপক্ষে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে।
এদিকে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইনকে শরীফুল আলমকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।’
Comments
comments