ঢাকারবিবার , ২৮ জানুয়ারি ২০২৪
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নানা প্রতিকূলতায় সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

প্রতিবেদক
Kolom 24
জানুয়ারি ২৮, ২০২৪ ১০:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০২০ সালের মার্চে। উদ্বোধনের পর থেকেই এখানকার সেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে রোগী ও স্বজনেরা। তাদের অভিযোগ, গুরুতর ও জটিল রোগে আক্রান্তদের হাসপাতালে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়। সময়মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাওয়া যায় না। চিকিৎসকেরা রোগী ঠিকমতো না দেখেই অন্য প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেন। সেখানকার আউটসোর্সিং কর্মীরা পাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই চিকিৎসা সেবার ওপর ভিত্তি করে দেশের ২৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে সম্প্রতি ১০ম স্থান অর্জন করেছে হাসপাতালটি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১১৯টি। এর বিপরীতে কর্মরত আছেন ৮৫ জন। ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসক প্রয়োজন কমপক্ষে ২০০ জন। এছাড়া ইর্ন্টান চিকিৎসক অপ্রতুল। অবৈতনিক চিকিৎসকতো নেই বললেই চলে। এছাড়া হাসপাতালটির আউটসোর্সিংয়ে লোকবল দরকার কমপক্ষে ৪৫০ জন। আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত রয়েছে ১৫৫ জন। এদের বেশিরভাগ সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন না কারণ তাঁরা প্রভাবশালী মহলের লোক। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ প্রভাবশালীদের চাপে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে হাসপাতালটিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে ৪০ জন। আয়তন অনুযায়ী কমপক্ষে ১০০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী প্রয়োজন এই হাসপাতালটিতে।

সূত্র জানায়, ২০২২ সালে হাসপাতালের বহিঃবিভাগে ২ লাখ ৬৫ হাজার ২০৬ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। ২০২৩ সালে হাসপাতালের বহিঃবিভাগ থেকে ৩ লাখ ২৩ হাজার ১৮ জন চিকিৎসা সেবা নেন। ২০২২ সালে অন্তঃবিভাগে মোট অবস্থানকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৫৬ জন। ২০২৩ সালে অন্তঃবিভাগে অবস্থানকৃত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৫ জনে। অন্যদিকে ২০২২ সালে হাসপাতালটিতে মেজর ও মাইনর অপারেশন হয় ৭৪৫২টি। ২০২৩ সালে মেজর ও মাইনর অপারেশন হয় ১০১৫০টি। হাসপাতালটিতে যে পরিমাণ ওষুধ ও রিএজেন্ট বরাদ্দ হয় তা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। যা দিয়ে রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী ছয় মাসও চলা সম্ভব হয় না তাই ওষুধ ও রিএজেন্ট অগ্রিম এনে সমন্বয় করা হয়।

হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানায়, ডায়ালাইসিস করাতে জনপ্রতি ফি নেয়া ৪০০ টাকা। সবমিলিয়ে খরচ ১৬০০ টাকা। কম খরচ ও সেবার মান ভালো হওয়ায় প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালটিতে দুটি সেশনে ২৭ জন কিডনি রোগী সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করতে পারেন। এদিকে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকে শতাধিক কিডনি রোগী। শতাধিক কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস করতে প্রয়োজন কমপক্ষে ৫০টি মেশিন তবে হাসপাতালটিতে রয়েছে মাত্র ৬টি। ফলে ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা কিডনি রোগীরা।

জেলা শহরের গাইটাল এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, আমার পরিবারে একজন কিডনি রোগী আছে। তাঁর নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয়। সৈয়দ নজরুল মেডিকেলে ডায়ালাইসিস মেশিন কম থাকার কারণে আমার মতো শতাধিক পরিবারের লোকজন বাইরে থেকে অত্যাধিক খরচ দিয়ে ডায়ালাইসিস করাচ্ছি।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এ এম ওবায়েদ অভিযোগ করে বলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যাওয়া অধিকাংশ রোগীর স্বজনদের মালামাল চুরি হয়ে যায়। যা এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। যার কারণে রোগীদের পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্সেরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোগীদের পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্সদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক হেলাল উদ্দিন বলেন, অপ্রতুল চিকিৎসক ও আউটসোর্সিং কর্মী নিয়ে আমরা সেবার মান বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলানোর জন্য হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় সংখ্যাক ডায়লাইসিস মেশিন সরবরাহ ও লজিস্টিক সার্পোট পেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত সকল রোগীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক ও নার্সসহ সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এই হাসপাতালে। এছাড়া হাসপাতালের সামনের সড়কের উভয় পাশের অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে জরুরি ও মুমূর্ষু রোগী আনা-নেওয়ায় প্রায় সময়ই জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এ জন্য অবৈধ দোকানগুলো দ্রুত অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

Comments

comments