ঢাকারবিবার , ৩ মার্চ ২০২৪
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই ২০ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের- ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আলমগীর

প্রতিবেদক
Kolom 24
মার্চ ৩, ২০২৪ ৯:৫৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেছেন, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের চত্বরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে আমরা একত্রিত হয়েছি। গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষসহ এই কলেজের সকলকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম এখানে শুরু করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। কারণ আমাদের প্রায় ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যাদের কোনো নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। সেই হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ১০ তলা ভবনে তার শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছে, আমামদের শিক্ষার্থীরা একটি মনোরম পরিবেশ পেয়েছে অন্যান্য শিক্ষার্থীর সাথে মিশতে পারছে সেটা একটা বড় ঘটনা আমার দৃষ্টিতে।

রোববার (০৩ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে (গুরুদয়াল সরকারি কলেজ) বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কেন দরকার? আপনারা ভাবছেন গুরুদয়াল সরকারি কলেজই তো আছে। এখানে ১৬টি বিষয়ে অনার্স এবং ১০টি বিষয়ে মাস্টার্স চালু আছে। যেটাকে আমরা উচ্চ শিক্ষা বলে থাকি। তাহলে আরেকটি প্রতিষ্ঠান কেন দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে মানুষ জ্ঞানের সৃজন করতে পারে, লালন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ১০৩ একর জায়গাতে স্থাপিত হবে। আপনি ভাববেন না বিশ্ববিদ্যালয় ১০৩ একরে সীমাবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবার পর যে কর্মকাণ্ড চলবে সে কর্মকাণ্ড একটি জনপদ তৈরি করবে। বিশ্বের অনেক জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পরে শহর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমন অনেক কাহিনি আছে। বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু একদিনে গড়ে উঠে না। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রত্যাশা যেটা করবেন সেটা সুদূরপ্রসারী। অক্সফোর্ডের কথা যদি আমরা চিন্তা করি অক্সফোর্ডের বয়স হয়েছে এক হাজার বছর আর আমাদের সবচেয়ে পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয়টির বয়স সবেমাত্র একশ বছর।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ বছরের অর্জন আর এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৪ বছর আগে এবং শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১ বছর। আমাদের শিক্ষার্থীরা সবেমাত্র সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে। বীজ রোপণ করার পর চারাগাছ হলে যেভাবে পরিচর্যা করা হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সেভাবে পরিচর্যা করতে হবে। ইউজিসিকে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। আসলে ইউজিসি অভিভাবক না, কিশোরগঞ্জের জনগণই হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৬টি। দেশে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কয়টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে ১০ গুণ। শুধু ১০ গুণ নয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে ১৭০ গুণ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে ১১৫টি। কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। প্রশ্ন থাকতে পারে এতো বিশ্বিবদ্যালয় কেনো দরকার? বিশ্বিবদ্যালয় গড়ে উঠবে জনসংখ্যার বিচারে। আমাদের জনসংখ্যা ১৮ কোটি।

ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, কোনো সম্পদই এখন সম্পদ নয়। এখন সম্পদ হচ্ছে মেধা। এখন মেধা দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। এখন মানুষ মানুষকে রিপ্লেস করবে। এই মানুষ তৈরি করবে কারা। এই মানুষ তৈরি হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। একসময় প্রাইমারি শিক্ষা এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একসময় ৩০% প্রাইমারি স্কুলে যেতো বা তার চাইতে কম। আজকে প্রাইমারি স্কুলে আমরা বলছি থিউরিটেক্যালি ১০০%। আমরা কিন্তু ঝরে যাওয়া রোধ করেছি। দক্ষিণ কোরিয়ার ৭০% হায়ার এডুকেশনে যায়। আমাদের দেশে মাত্র ১০ থেকে ১২% হায়ার এডুকেশনে যায়। আমাদের এটাকে ৭০% এ উন্নিত করতে হবে। তানাহলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশের যে উন্নয়নের পরিকল্পনা করছি তখন কিন্তু আমরা উন্নত হতে পারবো না। কোনো জাতি পরনির্ভরশীল থেকে কখনো উন্নতি করতে পারে না। এই নির্ভরশীলতা কমাতে হলে আমাদেরকে নলেজ বেইজড সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে। কারা এই সোসাইটি তৈরি করবে? আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিমান্ড কিন্তু আস্তে আস্তে আরও বাড়বে। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি নয়।

তিনি বলেন, মূল চ্যালেঞ্জ যেটা আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে ওই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারছি কিনা? যে পর্যায়ে নিয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সত্যিকারের শিক্ষা দেয়া হবে। আমাদের কিছুদিন আগেও মূল লক্ষ্য ছিলো ফুড সিকিউরিটি। এখন খাদ্যের সংকট নেই। এখন সংকট আছে শিক্ষার, এখন সংকট আছে স্বাস্থ্যের। এখন মানুষ শিক্ষা চাচ্ছে, বিদ্যুৎ চাচ্ছে, স্বাস্থ্যসেবা চাচ্ছে। এগুলো করতে হলে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষিত না হলে আপনি স্বাস্থ্যসেবা পাবেন না। আপনি ডাক্তার বানাতে পারবেন কিন্তু মানবিক ডাক্তার বানাতে পারবেন না। মানবিক ডাক্তার বানাতে হলে শিক্ষাই পারে মানবিক ডাক্তার বানাতে। শিক্ষা এবং উৎপাদন ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন হয়নি। একসঙ্গে স্বাধীন হয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। ভারত কেনো এগিয়ে গিয়েছে কারণ গনতন্ত্র চর্চা তাঁরা করেছে একটা স্টেবল গর্ভামেন্ট পেয়েছে। পাকিস্তান কোনো পিছিয়ে গিয়েছে কারণ তাঁরা গনতন্ত্র চর্চা করেনি। আমাদের উত্থান পতন হয়েছে। আমাদের ডেমোক্রেসি আসে নাই। গত ১৫ বছরে একটা স্টেবল গর্ভাম্যান্টের কারণে উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। এখন যা আমারা দেখতে পাচ্ছি। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে এ দেশকে গড়ে তুলতে হবে। গড়ে তোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়।

ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলার জন্য আমাদের মঞ্জুরী কমিশনের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু আমরা যে বাজেট পাই তার ওপর নির্ভর করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাজেট দিতে হয়। বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালে যখন ইলেকশনের ক্যাম্পেইন করছিলেন তখন বলেছিলেন, “আমাদের শিক্ষা খাতে যে বাজেট হবে তা হবে জিডিপির ৪%।” এখন এইটা আমাদের কত? ২% এর কাছাকাছি। ইভেন গত বছর এইটা ছিল ১.৮৪% বা এর কাছাকাছি। জিডিপির ২% এবং টোটাল ন্যাশনাল বাজেটের ১২% দিয়ে সত্যিকার অর্থে কোয়ালিটি এডুকেশন দেয়া আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের যারা শিক্ষক আছেন তাদের আমরা স্যালুট দেই।

ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অন্যান্য দেশের শিক্ষকদের চেয়ে ৮০% লো পেইড। শ্রীলঙ্কা, ইন্ডিয়াসহ আওব দেশেই শিক্ষকদের বেতন বেশি শুধু আমাদের দেশেই নাই। এই বিষয়গুলা আমাদের অনেক ক্রাইসিস তৈরি করছে।

বশেমুরবি’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, বশেমুরবি’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মো, নূরুজ্জামান, বশেমুরবি’র ট্রেজারার অধ্যাপক মো. ইমান আলী, বশেমুরবি’র সিন্ডিকেট সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হক, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আ.ন.ম. মুশতাকুর রহমান। সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিন।

Comments

comments