ঢাকারবিবার , ৫ মে ২০২৪
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বর্ণিলের ভালবাসা লুফে নিল মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর নবজাতক

প্রতিবেদক
Kolom 24
মে ৫, ২০২৪ ৭:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণী (২০)। এখনো তাঁর নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীটি। রোববার (০৫ মে) বিকেলে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ তাঁর মেয়ে বর্ণমালা ও ছেলে বর্ণিলকে নিয়ে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী এবং তাঁর ছেলের খোঁজ খবর নিতে যান হাসপাতালে। এ সময় শিশুটির জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী খাবার দুধ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উপহার দেন পুলিশ সুপার ও তাঁর ছেলে-মেয়ে।

জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের নয়াপাড়া ইটখলার পাশ দিয়ে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে যাচ্ছিলো ওই মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী। এ দৃশ্য দেখে ইটখলাটির পাশের বাড়ির দুলেনা ও সেলিনা বেগমের মায়া হয়। তারা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে ওইদিনই ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই তরুণী।

দুলেনা ও সেলিনা বেগম বলেন, ওই তরুণীর গোঙানির শব্দে আমরা কাছে গিয়ে দেখি প্রসব ব্যথায় কাতরাচ্ছে। পরে তরুণীটিকে ঘরে আশ্রয় দেই এবং ওই তরুণী ছেলে সন্তান প্রসব করে। বিষয়টি প্রথমে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনসুর আলীকে জানাই তারপর মনসুর আলীর মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফাকে বিষয়টি জানালে তিনি আমাদের বাড়িতে এসে ওই তরুণী এবং তাঁর ছেলেকে দেখতে আসেন। পরে ওই তরুণী ও তার ছেলে সন্তানকে পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যান হাসপাতালে। আমরা এখন পুলিশের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ওই তরুণী এবং শিশুটির দেখভাল করছি।

এদিকে আগামী রোববার বিশ্ব মা দিবস। বিশ্ব মা দিবসে মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের গর্ভের সন্তানের বাবা কে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে কিশোরগঞ্জে৷ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সৈয়দ ইয়াছিন বলেন, আমাদের সমাজে বসবাসরত মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে৷ নৈতিকভাবে মানুষের কতটুকু অধ:পতন হলে এমন কাণ্ড করে। দিন দিন এমন ঘটনা বাড়ছে। যারা এমন বিষয় ঘটায় তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাই।

রোববার (০৫ মে) বিকেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের ছেলে বর্ণিল (৭) ওই মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর ৭ দিন বয়সী ছেলে সন্তানের হাতে ছোট্ট একটি খেলনা গাড়ি তুলে দিচ্ছেন। এ দৃশ্য দেখে হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁরা বলেন, শিশুটির পিতা কে? কেউ জানে না। পিতার ভালবাসা না পেলেও বর্ণিলের ভালবাসা ঠিকই লুফে নিয়েছে।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, এ ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমরা সেখানে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে মা ও নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসি। বর্তমানে মা ও নবজাতক শিশু এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। মা ও ছেলে দুজনের ওষুধ খরচসহ সবকিছু দেখভাল করা হচ্ছে। ওই তরুণী এবং তাঁর ছেলে সন্তান যতদিন হাসপাতালে থাকবে ততদিন জেলা পুলিশ তাদের দেখভাল করবে। ওদের যা যা প্রয়োজন সবকিছুই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হবে। আমরা ওই তরুণীর পরিচয় সনাক্তের জন্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তরুণীর ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং নবজাতকটির ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য যা যা করণীয় তাই করছি। জেলা পুলিশ তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আকরাম উল্লাহ বলেন, মা ও ছেলে দুজনই ভালো আছেন। সুস্থ্য হওয়ার পর আবাসনের জন্য তাদের সমাজ সেবা অধিদপ্তরে পাঠানো হবে।

Comments

comments