কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এক কাতার প্রবাসীর স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৩ জুলাই) সকালে পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের হালুয়াপাড়া এলাকার পাট ক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত স্মৃতি আক্তার (২৪) একই এলাকার মানিক মিয়ার মেয়ে ও উপজেলার মসূয়া এলাকার কাতার প্রবাসী আমিন ভূইয়ার স্ত্রী।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, ৫ বছর আগে উপজেলার মসূয়া এলাকার কাতার প্রবাসী আমিন ভূইয়ার সাথে বিয়ে হয় মানিক মিয়ার মেয়ে স্মৃতি আক্তারের। ৫-৬ মাস আগে কাতার থেকে এসে স্ত্রীকে আবার শ্বশুর বাড়িতে রেখে কাতারে চলে যায় আমিন। স্মৃতি আক্তার বাবার বাড়িতেই থাকতো। তাদের কেনো সন্তান নেই। শুক্রবার সকালে তার গলাকাটা মরদেহ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের হালুয়াপাড়া এলাকার পাট ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
স্মৃতি আক্তারের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ৮টা থেকে ৯টার দিকে স্বামী আমিন মিয়ার সাথে কথা হয় স্মৃতির। তখন স্মৃতির স্বামী শুক্রবার (১২ জুলাই) তার বাড়ি মসূয়া ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য বলেন। শুক্রবার (১৩ জুলাই) সকালে স্মৃতিকে তাঁর শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সুযোগ হয়ে উঠেনি স্মৃতির, সকালে মিলল মরদেহ।
নিহতের বাবা মানিক মিয়া বলেন, আমার মেয়েকে একই এলাকার মুজিবুরের ছেলে মেহেদী বিরক্ত করতো। সে জোরজবর করতো। আমার মেয়েকে জোরজবরি করে নিয়ে যেতে চাইতো। তার সাথে না গেলে আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে। আমাকেও মেরে ফেলবে। আমাকে মারধর করতে আসতো। মেহেদী বলতো, “হয়তো ছেরি শেষ হইবো নাহয় বাপ শেষ হইবো।” বাপেরে মারতে পারে নাই আমার ছেরিরে মাইরা ফেলছে মেহেদী আর মুজিবইরা। এরা কি একা মারছে? আমার ছেরিরে মারনের সময় কি নড়ছে না? এদের সাথে আরও পার্টি আছিল। আমার ছেরির রোগ কাটছে, বুকে ফারাইছে, গলা জব করছে। এই জব আমারে করতে তোরা, আমার মেয়েরে করলি কেরে তোরা।
নিহতের মা ফেরদৌসী আক্তার বলেন, মেহেদী এই কাজ করছে। আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাইতো। আমার মেয়ে বলতো, “আমার বিয়ে হয়ে গেছে। আমার জামাই আছে। আমি বিয়ে করবো কেনো।” আমার মেয়েকে কেনো বিয়ে করতে পারে না এইজন্য আমার মেয়েকে নিয়ে মেরে ফেলছে।
কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে মেয়েটির চাচা আমাদের জানায় স্মৃতি আক্তারের মরদেহ ধানক্ষেতে পড়ে আছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত মরদেহ উদ্ধার করতে যাই। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। খুব শীঘ্রই এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে সক্ষম হব। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Comments
comments