ঢাকারবিবার , ১১ আগস্ট ২০২৪
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীরা দিল্লির ক্রীতদাস, আর তথ্য গোপন করে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন আব্দুল হামিদ- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান

প্রতিবেদক
Kolom 24
আগস্ট ১১, ২০২৪ ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিনিয়র আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান বলেছেন, মোদি মনে খুব কস্ট পাইছে। আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীরা হইলো দিল্লির ক্রীতদাস। এখন ইন্ডিয়া দুইভাগ। হাসিনারে দিল্লি সাপোর্ট করে আর কলকাতার মমতা ব্যানার্জি সাপোর্ট করে আমাদের আন্দোলনকে। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উনি বলছে, কি বলছে “বাংলার কোনো সন্তান বিপদে পড়ে, হাসিনার গুলি খেয়ে আমার দরজায় টোকা দেয় সেই দরজা আমি খুলে দিব।

শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে জেলার ইটনা উপজেলার রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেন, ১৫ বছর পর দেশের মানুষ মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে। আমাদের সোনার ছেলেরা আমাদের জন্য এ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আমরা এখন স্বাধীন। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা অনেক কঠিন। আমাদের সবাইকে এ লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি বলতে চাই, আমি কেনো ১৫ বছর ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম বক্তৃতা করতে পারি নাই। আমার কি অপরাধ? আমি আজ থেকে ২৮ বছর আগে এই ইটনাতে আসছিলাম। আমার জীবনের সমস্ত একাউন্ট হাসিনার কাছে রাইখা আসছিলাম। ৯৬ সনে আমি টেলিভিশন মার্কায় নির্বাচন করেছিলাম। আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছিলেন। ৯৬ এর টেলিভিশন মার্কা আর হামিদ সাহেবের নৌকা মার্কা। আজ চ্যালেঞ্জ করছি ভোট গুণে দেখেন আমি পাস করেছিলাম। আমার ভোট রাতে হাওরে ফেলে দিয়ে ২৪ ঘন্টা পর আমাকে পরাজিত ঘোষণা করা হয়েছিলো।

ফজলুর রহমান বলেন, আমি ১৫ বছর হাওরে রাজনীতি করতে পারি নাই। হামিদ সাহেব স্পিকার হয়েছেন। তারপরে উনি তথাকথিত রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। উনাকে আমি রাষ্ট্রপতি বলি না। ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোডি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেন তখন তিনি বলেছিলেন “আমি জাতির সামনে মিথ্যা বললে আমার শপথ বৈধ হবে না। আমি ১৭ বছর বয়সে একটা বিয়ে করছিলাম। এখনো আমার বউ ওইখানে থাকেন তার নাম জশোদা।” আর হামিদ সাব যখন শপথ নেয় তখন তিনি কি লিখলেন, উনার ৩ ছেলে, এক স্ত্রী ও এক মেয়ে। আর মিরপুরের একটা বাসাতে এক মহিলা বইসা আছে তার ক্লাস সেভেনে পড়া একটা ছেলেকে সে বলতেছে, ‘তোর বাবা শপথ নিব, শোন।” কিন্তু যখন টেলিভিশন খুলে শপথ অনুষ্ঠান দেখছিলো তখন সঞ্চালক বলছিলো হামিদ সাবের ৩ ছেলে, এক স্ত্রী ও এক মেয়ে। তখন মিরপুরের ওই ছেলেটা যে টিভির সামনে বসেছিলো সে ছেলেটা কাঁদতে কাঁদতে তাঁর মাকে বলছিলো, “মা তুমি যে বললা এই লোকটা আমার বাবা লাগে। তারতো তিনটা ছেলে আছে তাইলে আমি কার ছেলে মা।” তাহলে তিনি একটা স্ত্রীকে অস্বীকার করলো এবং তার ঔরসজাত ছেলেকে অস্বীকার করলো। আমি চ্যালেঞ্জ করছি একটা কথা মিথ্যা বললে জীবনে আমি রাজনীতি করবো না। উনি বলুক উনার আরেকটা পরিবার আছে কিনা। ওই পরিবারে তার সন্তানের নাম জয় কিনা? তাহলে মিথ্যা শপথ নিয়ে কি রাষ্ট্রপতি হয়?

ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ফজলুর রহমানের সহধর্মিনী সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম রেখা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মনির উদ্দিন, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম সোহাগ ও হাবিবুল হান্নান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম পলাশ ও সোমেশ গোপ, ধনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ভজন কান্তি দাস, সদর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি এম এ সালেক, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার বেপারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির নেতাকর্মীরা জানায়, বিগত ১৩ বছর ধরে হাওরে বিএনপির প্রকাশ্য রাজনীতি অনেকটা নিষিদ্ধই ছিলো কিশোরগঞ্জের ইটনায়। সমাবেশ করা দূরে থাক, মিছিল-স্লোগানও দিতে পারতেন না বিএনপি নেতাকর্মীরা। এক প্রকার জিম্মি অবস্থায় নিজ বাসভূমে পরাধীন জীবন যাপন করেছেন সেখানকার নেতাকর্মীরা। মুখ খুললেই তাদের তের শিকের বাসিন্দা হতে হয়েছে। গায়েবি মামলা, অত্যাচার আর নির্যাতনে জর্জরিত হন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত। জেল-জুলুম আর নির্যাতনের মধ্য দিয়ে হাওরের এ উপজেলা পরিণত হয়েছিল এক পরিবারের শাসনের ক্ষেত্র।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, ইটনায় বিএনপি সর্বশেষ সমাবেশ করেছিল ২০১১ সালের ৩০শে জুলাই। তখন ইটনা উপজেলার বাসিন্দা সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট ফজলুর রহমান জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়াকে উপলক্ষ্য করে সমাবেশটি ডাকা হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক। ইটনা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সে সমাবেশ করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের নয়টি শর্ত বেধে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে ছিল, শুধুই সংবর্ধনা দেওয়া যাবে, কোনো মাইকিং করা যাবে না। দলীয়ভাবে যোগদান অনুষ্ঠান সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যাবে না। কোনো প্রকার স্লোগান বা বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারও নিষেধ ছিল। এসব শর্ত এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও সে সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছিল। সমাবেশ শুরুর আগেই হাজার হাজার মানুষ ইটনা কলেজ মাঠে জড়ো হয়েছিলেন।

ওই সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ও ইটনা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু ও জাতীয় পার্টির ইটনা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের নেতৃত্বে প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী বিএনপিতে যোগদান করেছিলেন। ইটনা কলেজ মাঠে এটিই ছিল বিএনপির শেষ সমাবেশ। এরপর আর সেখানে কোন সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। এর প্রায় তিন বছর পর ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ রাতে ইটনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইটনা পশ্চিমগ্রাম নূরপুর ডিডি মাদরাসা এলাকার মাঠে বিএনপি সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম কামাল হোসেনের এক নির্বাচনী পথসভায় এডভোকেট ফজলুর রহমান বক্তৃতা করেছিলেন। সেখানে রাখা বক্তৃতার জন্য তখন ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছিল এবং সে মামলায় তাকে দীর্ঘদিন কারাভোগ করতে হয়। গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দীর্ঘ বছরের এরকম দুঃসহ অবস্থা পেরিয়ে শনিবার প্রথমবারের মতো প্রশাসনের কোন বিধি-নিষেধ ছাড়া ইটনা কলেজ মাঠে সমাবেশ করেছে বিএনপি।

Comments

comments