অর্থবছরের শুরুতেই ব্যাংক ঋণনির্ভরতা বেড়েছে সরকারের। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম দেড় মাসে ব্যাংক থেকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছর বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক খাত থেকে ঋণ করে সরকার। এবার মহামারী করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। যার কারণে সরকারের রাজস্ব আহরণ কমে গেছে। লক্ষ্য অনুয়ায়ী রাজস্ব পাচ্ছে না। ফলে বাজেটের বাড়তি ব্যয় মেটাতে অতিমাত্রায় ব্যাংক ঋণনির্ভরতায় ঝুঁকে পড়েছে সরকার।
নতুন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে বলে পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। আর অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ৫ হাজার কোটি টাকাসহ মোট ২৫ হাজার কোটি টাকা নেবে বলে জানিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪৩ দিনে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিয়েছে ১০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার কোনো ঋণ না নিয়ে উল্টো আগের নেওয়া ঋণের দুই হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা শোধ করেছে। এতে করে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪২২ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ১২ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছর শেষে (৩০ জুন পর্যন্ত) যা ছিল এক লাখ ৩৫ হাজার ৭২০ কোটি টাকা।
গত অর্থবছর শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সরকারে’র মোট ঋণ ছিল ৪৪ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। চলতি বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে উল্টো শোধ করায় ১২ আগস্ট পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে চলতি অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আগের বছরের মতো অপরিবর্তিত রেখে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধার’ণ করা হয়েছে।
যদিও গত অর্থবছরে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গেল অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির ছিল ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। যা লক্ষ্যমাত্রা’র চেয়ে অনেক কম। এছাড়া চলতি অর্থবছরে সরকারের ঋণ প্রবৃদ্ধি’র প্রাক্কল’ন করা হয়েছে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
Comments
comments