করোনা মহামারীর কারণে সাত মাস বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার দুই দেশের মধ্যে ‘এয়ার বাবল ফ্লাইট’ উদ্বোধন হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলকাতার উদ্দেশে একটি ফ্লাইট ঢাকা ত্যাগ করে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এখন থেকে সপ্তাহে ৫৬টি বাবল ফ্লাইট চলাচল করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস এম মার্শাল মফিদুর রহমান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল আহসান ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ।
মফিদুর রহমান বলেন, বিশেষ ব্যবস্থায় আপাতত তিন মাসের জন্য ‘এয়ার বাবল’ ব্যবস্থায় দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট চলাচল করবে। বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতা, দিল্লি ও চেন্নাইয়ে ফ্লাইট চলাচল করবে। প্রতি সপ্তাহে ২৮টি ফ্লাইট বাংলাদেশ থেকে যাবে। কলকাতা ও দিল্লিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, চেন্নাই ও কলকাতায় ইউএস-বাংলা এবং নভোএয়ার শুধু কলকাতায় ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
অন্যদিকে ভারত থেকেও ২৮টি ফ্লাইট ঢাকায় আসবে। ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া, ইনডিগো, স্পাইসজেট, ভিস্তারা ও গোএয়ার- এই পাঁচটি বিমান সংস্থার ফ্লাইট চলাচল করবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ভারতের সঙ্গে ফ্লাইট চালু হলে যাত্রীসংখ্যা অনেক বাড়বে। তবে ভারতে করোনা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি না হওয়ায় সেখান থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে ভালোভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকেও যারা ভারতে যাবেন, তাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ থাকলে ফ্লাইটে না নেয়ার কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে খুব শিগগিরই ভারত টুরিস্ট ভিসা চালু করবে বলে জানান ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। করোনার কারণে টুরিস্টসহ সব ক্যাটাগরির ভিসা বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত। তবে সম্প্রতি টুরিস্ট ছাড়া বাকি সব ক্যাটাগরির ভিসা চালু করে দেশটি।
এ প্রসঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, প্রতিদিন হাজার খানেক ভিসার আবেদন পড়ছে। প্রতিদিন এর সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে ভারত থেকে সব স্টাফদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এয়ার বাবল ফ্লাইটের মাধ্যমে পাঁচ থেকে সাত হাজার মানুষ প্রতিদিন ভারতে যাতায়াত করতে পারেন। পর্যটক ছাড়া সব ভিসা খোলা রয়েছে।
বাবল ফ্লাইটের কঠোর স্বাস্থ্য বিধিসহ বেশ কিছু নিয়মকানুন ও বিধিনিষেধ অনুসরণ করা হবে। এসব বিধি-বিধান মেনেই যাত্রীদের উঠতে হবে। এর মধ্যে প্রথমেই যাত্রীদের করোনা বা কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে। কোভিড নেগেটিভ সনদ ছাড়া কোনো যাত্রী দুই দেশে আসা-যাওয়া করতে পারবেন না। বাংলাদেশি যাত্রীদের সরকার-নির্ধারিত করোনা শনাক্ত কেন্দ্র থেকে এই পরীক্ষা করাতে হবে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের ঢাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। ফ্লাইট ছাড়ার আগে প্রতিটি উড়োজাহাজ জীবাণুমুক্ত করাতে হবে।
করোনা মহামারী ঠেকাতে গত ১২ মার্চ থেকে বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। তবে সম্প্রতি পর্যটন ভিসা ছাড়া ৯টি ক্যাটাগরিতে ভিসা ব্যবস্থা চালু করেছে দেশটি।
এদিকে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সংস্থাটি বুধবার থেকেই ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা, চট্টগ্রাম-চেন্নাই-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে শিডিউল ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করছে।
Comments
comments