ঢাকামঙ্গলবার , ২ মার্চ ২০২১
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সরকারি-বেসরকারি ১০ ব্যাংক মূলধন সংকটে

প্রতিবেদক
Kolom 24
মার্চ ২, ২০২১ ১২:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মহামারিতে বিশেষ সুবিধা এবং নানা ছাড়ের কারণে কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে। তারপরও মূলধন সংরক্ষণ পরিস্থিতির তেমন উন্নতি করতে পারেনি বেশ কিছু ব্যাংক। ডিসেম্বর শেষে দেশের সরকারি-বেসরকারি ১০টি ব্যাংক ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি। ফলে মূলধন ঘাটতি’তে পড়েছে এসব ব্যাংক।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকে’র কাছ থেকে আমানত নিয়ে ঋণ দেয়। সেই ঋণ খারাপ হয়ে পড়লে সেই অনুপাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়। আবার খারাপ ঋণের ওপর অতিরিক্ত মূলধন রাখার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।.. আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং রীতি ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী ঝুঁকি বিবেচনায় ব্যাংকগুলো’কে নিয়মিত মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বর্তমান নিয়মে ব্যাংকগুলো’কে ৪০০ কোটি টাকা অথবা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদে’র ১০ শতাংশে’র মধ্যে যা বেশি সেই পরিমাণ অর্থ ন্যূনতম মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়। এ শর্ত পূরণে ডিসেম্বর শেষে ব্যর্থ হয়েছে ১০টি ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে মূলধন সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো হলো রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, বেসরকারি খাতে’র এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। এছাড়া বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক।.. সব মিলিয়ে এসব ব্যাংকে’র মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দুই বিশেষায়িত ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৭ ব্যাংকের ঘাটতি ২৫ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, খেলাপি ঋণসহ নানা কারণে ব্যাংক খাত ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এটিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। এতে করে দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে’র উচিত যত দ্রুত সম্ভব এ সংকট উত্তরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপি কমেছে বিভিন্ন ছাড়ের কারণে। এটা কাগজে-কলমে কমেছে। মূলত বিতরণ করা ঋণের আদায় পরিস্থিতি ভালো না তাই মূলধন সংকটে পড়েছে। এ পরিস্থিতি’র উন্নতি হবে না চলতে থাকবেই যদি ঋণের গুণগত মান না বাড়াতে পারে। তাই যে কোনো উপায়ে খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোকে জোর দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বিভিন্ন সুবিধার পরও রাষ্ট্রীয় মালিকানার ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি এখন মূলধন সংকটে আছে। ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭০৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূলধন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি রয়েছে জনতার। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি পাঁচ হাজার ৪৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকা..। এছাড়া সোনালীর তিন হাজার ৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের তিন হাজার দুই কোটি ২০ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংক ১ হাজার ৪৯২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের ৬৭১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো’র মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঘাটতি ১০ হাজার ৮১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ১ হাজার ৪৫৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

বেসরকারি খাতের তিনটি ব্যাংকের মোট মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতি রয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের এক হাজার ৬২২ কোটি টাকা। ঘাটতিতে থাকা অন্য দুই ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের এক হাজার ৩৫ কোটি টাকা এবং পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমাস) ৩১০ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।

সরকারি ব্যাংকগুলোর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ার কারণ হিসেবে সাবেক এ গভর্নর বলেন, ঋণ দেয়া ও আদায়ে তাদের জবাবদিহিতা কম। তারা বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে দিচ্ছে; যার কারণে তা আদায় করতে পারছে না। ফলে তাদের অবস্থা বেশি খারাপ। এতদিন তাদের মূলধন ঘাটতির জোগান দিয়েছে সরকার।.. আর কত দেবে। এ অবস্থা থেকে উন্নতি করতে হলে ঋণ আদায় বাড়াতে হবে।..

জানা গেছে, সরকারি ব্যাংকগুলো’র মূলধন ঘাটতি তৈরি হলে বাজেট থেকে তার জোগান দিতে হয়। জনগণের করের টাকায় বিভিন্ন সময় মূলধন ঘাটতি’তে পড়া ব্যাংকগুলোতে অর্থ জোগান দেয় সরকার। তবে করে’র টাকায় মূলধন জোগানের বরাবরই বিরোধিতা করে থাকেন অর্থনীতিবিদরা।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তা’দের জোগান দেয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডার’দের লভ্যাংশ দিতে পারে না.।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদে’র ১০ শতাংশ বিবেচনায় ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর মূলধন রাখা’র কথা এক লাখ ১৫ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা..। তবে আপৎকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ ব্যাংক খাতে মূলধন রয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। এতে করে সব মিলিয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১৫ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।..

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ শেষে ব্যাংকিং খাতে’র মোট বিতরণ করা ঋণে’র পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা.। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা; যা বিতরণ করা মোট ঋণে’র ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

Comments

comments