ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৯ জুলাই ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দুর্নীতিবাজ যেই হোক ব্যবস্থা নিচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুলাই ৯, ২০২০ ৮:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে কে কোন দলের সেটা বড় কথা নয়, দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের আমরা ধরে যাচ্ছি। দুর্নীতিবাজ যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেব। এটা অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে একথা বলেন তিনি। খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির সাথে জড়িত, অনিয়মে জড়িত, আমরা যাকেই পাচ্ছি এবং যেখানেই পাচ্ছি তাকে ধরছি। আর ধরছি বলেই, চোর ধরে যেন চোর হয়ে যাচ্ছি। আমরা ধরি আবার আমাদেরকেই দোষারোপ করা হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। এর আগেতো দুর্নীতিটাই নীতি ছিল। অনিয়মটাই নিয়ম ছিল। সেভাবেই রাষ্ট্র চলেছে। আমরা যতদূর পারি শুদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এই অনিয়মগুলো আমরা নিশ্চয়ই মানব না।’

এর আগে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বক্তৃতা করেন। তিনি বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এরপর কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যেও দেশব্যাপী তার সরকারের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী।

রিজেন্ট হাসপাতালের দুর্নীতি, করোনা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়া বিষয়ে ব্যয়ের পরিসংখ্যান এবং অন্যান্য অনিয়ম-অসঙ্গতির প্রসঙ্গে দেশে ‘৭৫ পরবর্তী সামরিক সরকারগুলোর দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণকে দায়ী করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ এর পর যারা রাতের অন্ধকারে অস্ত্র হাতে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারাই বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র নষ্ট করে দিয়ে গেছে। কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য এরা মানুষকে দুর্নীতি শিখিয়েছে, কালো টাকা বানাতে ও ঋণখেলাপি হতে শিখিয়ে এই সমাজটাকে কলুষিত করে দিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যে আগে একটা আদর্শ নিয়ে চলত, নীতি নিয়ে চলত, দীর্ঘদিন মিলিটারি ডিক্টেটরশিপ এদেশের মানুষের চরিত্র হরণ করেছে। কারণ, অবৈধ ক্ষমতাটাকে নিষ্কণ্টক করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। তারা বছরের পর বছর এই দুর্নীতি-অনিয়মের বীজ বপন করেছে। তা মহীরুহ হয়ে গেছে। এখন আপনি যতই কাটেন আবার কোথা থেকে যেন গজিয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে চরিত্রহীনতা একেবারে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত। সেখানে আপনি যতই চেষ্টা করেন এর মূলোৎপাটন করা যথেষ্ট কঠিন।’

সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সাফল্য ও দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও এর মধ্যে যে খবরগুলো আসছে, তাতে বুঝতে পাচ্ছেন, এটা কারা করছে।’

একের পর এক বিভিন্ন দুর্নীতিবাজদের পাকড়াওয়ের উল্লেখ করে দুর্নীতির মূল উৎপাটনে সরকারের আন্তরিকতার বিষয়টিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং ‘ভয়কে জয় করার’ জন্য সবাইকে পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কথা শুনলেই মানুষ ভয়ে আতঙ্কিত হয়। এত আতঙ্কিত হবো কেন। মরতে তো একদিন হবেই। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাবো। আমাদের দেশে করোনারোগীর সুস্থ হওয়ারর হার অনেক বেশি। মনে সাহস রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

এ সময় সরকারের পাশাপাশি পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বর্ডার গার্ড, সশস্ত্রবাহিনী, আনসার ও ভিডিপিসহ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা করোনা মোকাবেলায় দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ও ত্রাণ কার্যে সহযোগিতা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি করোনা মোকাবিলা ও অর্থনীতিকে সচল রাখায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন তিনি।

বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রায়াত্ত ২৫টি পাটকল আধুনিকায়নে এসব মিলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে উৎপাদন বন্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত এক বছর ধরে এ পাটকলগুলোর ২৫ হাজার শ্রমিককে সরকারের পক্ষ থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছে, বিজেএমসি দিতে পারছে না। এ পাটকলগুলো সবচেয়ে পুরোনো। ৫০ ও ৬০ এর দশকে এগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। এগুলো আর লাভজনক করা সম্ভব না। আমরা পাটের জিন আবিষ্কার করেছি। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের সম্ভাবনা রয়েছে। এ পাটকলগুলো সময়োপযোগী ও আধুনিক করা হবে। আমরা সেটা করবো। যারা আগ্রহী হবে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো যাবে।’

শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের পাওনা ৫ হাজার কোটি টাকা আমরা পরিশোধ করছি। সব টাকা তাদের হাতে দেওয়া হবে না। কারণ নগদ টাকা দিয়ে দিলে তখন দেখা যাবে মেয়ের জামাই, ভাই, ভাতিজা, আত্মীয়-স্বজন সব এসে হুমড়ি খেয়ে পড়বে এবং ভাগ চাইবে। অর্ধেকটা সঞ্চয়পত্র করে দেব। পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, যেখানে তারা ১১ শতাংশের মতো পাবে। সেখানে প্রতি তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক পাবে, প্রতিদিন কাজ করে মাসে যা মজুরি পেত, তার চেয়ে বেশি টাকাই পাবে।’

দেশে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাতো আছেই তার সাথে এখন আবার যোগ হয়েছে বন্যা। ইতোমধ্যে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালননিরহাট, সিলেট, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টঙ্গাইল, মাদারীপুরসহ বন্যা দেখা দেওয়া ১২টি জেলায় প্যাকেট ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৬৪টি জেলার জন্য বন্যার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১০ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন চাল ও ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া রয়েছে। যাতে দুর্যোগ হলে কোনো ধরনের অপেক্ষা না করে সঙ্গে সঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা যায়।’

প্রধানমন্ত্রী এই করোনাকালিন বাজেট প্রণয়নের জন্য অর্থমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যা অনেক উন্নত দেশও করতে পারেনি। কিন্তু আমরা করেছি।’

Comments

comments