ঢাকাশনিবার , ৩১ অক্টোবর ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বিষপানে আত্মহত্যা

প্রতিবেদক
Kolom 24
অক্টোবর ৩১, ২০২০ ১১:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে ভিডিও আপলোড ও সুইসাইড নোট লিখে কৃষ্ণ কুমার অধিকারি (৩০) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে । কৃষ্ণ কুমার অধিকারি শৈলকুপা উপজেলাধীন ১০ নং বগুড়া ইউনিয়নের আলফাপুর গ্রামের অমিত কুমার অধিকারির ছেলে।

কৃষ্ণ কুমার অধিকারির বাবা সাংবাদিকদের জানায়, কৃষ্ণের দ্বিতীয় স্ত্রী তার উপর মানসিক অত্যাচার করার কারনেই তার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার আগে সে কাগজে বিস্তারিত লিখে গেছে এবং বিশ পান করার আগে সে দুষ্টু ছেলে নামের একটি ফেসবুক আইডিতে তার মৃত্যুর কারনের ভিডিও আপলোড করেছে। তবে তার সুইসাইড নোটে কৃষ্ণের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার বাবা মার কারনেই সে আত্মহত্যা করছে বলে জানায়।

কৃষ্ণের বাবার সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ বছর আগে কৃষ্ণ পাশের আবাইপুর ইউনিয়নের কুমিড়াদহ গ্রামে বাক প্রতিবন্ধী এক নারীকে বিয়ে করে। সেখানে কৃষ্ণের একটি মেয়ে সন্তান আছে। তারপরে প্রায় ১ বছর আগে কাউকে না জানিয়ে পাশের রতণাট গ্রামে অনার্স পড়ুয়া একটি মেয়ে কে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ে করে। সে এই বউয়ের সাথে মাগুরা বাসা ভাড়া করে থাকে। এই মেয়ে নাকি সন্তান সম্ভবনা ছিল। তবে কৃষ্ণের বাবা কৃষ্ণের দুই বিয়ের কথা স্বীকার করলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে কুমিড়াদহ গ্রামে বিয়ে করার আগে কৃষ্ণ আরও এক বিবাহ করেছিল। তবে সেই বউকেই সে বাড়ীতে নিয়ে আসতে পারেনি।

তবে এলাকাবাসী জানায়, কৃষ্ণ মূলত প্রতারণা করে ভুল বুঝিতে পরিচয় গোপন করে রতণাট গ্রামে অনার্স পড়ুয়া মেয়েটিকে বিয়ে করে। সে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখা পড়া জানে। তারপর মেয়েটি যখন জানতে পারে যে কৃষ্ণ বিবাহিত তার একটি সন্তান আছে তখন সে তার সাথে সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তখন সে ঐ মেয়েটিকে ফিরে পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ পাওয়ার পর গত বুধবার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে মেয়ে কৃষ্ণের সাথে সংসার করতে অস্বীকার করার কারনে মেয়ের বাবাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। কিন্ত সে তার পরের বউ নেবেই নেবে। এই বউ ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এলাকার বেশ কতিপয় ব্যক্তি তার নিকট থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এখানেই শেষ নয় ঐ বউকে উঠায়ে নেওয়ার জন্য সে পাংশা এলাকা থেকে সন্ত্রাসী বাহিনি ভাড়া করে। এত কিছুর পর যখন বউ আর তার সাথে সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেয় তখন সে গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় বউয়ের বাড়ির সামনে পথে দাড়িয়ে বিশ পান করে মোটর সাইকেল চালিয়ে বাড়ীতে এসে বাড়ির সকল কে জানায় যে সে বিশ পান করছে। বাড়ির লোক জন তাকে প্রথমে শ্রীপুর পরে মাগুরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে মাগুরা হাসপাতালে কৃষ্ণ মারা যায়।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে কৃষ্ণের অভিযুক্ত স্ত্রীর সাথে কথা বললে সে জানায় যে কৃষ্ণের বাড়ি আমার গ্রামের পাশের গ্রাম হলেও আমি ছোট্ট বেলা থেকে মাগুরা বসবাস করার কারনে তার সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। তার সাথে আমার মোবাইলে সম্পর্ক হয়। তারপরে একদিন ইজিবাইকে যাওয়ার পথে সে আমাকে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরে যখন জানতে পারি যে তার বউ বাচ্ছা আছে তা গোপন করে আমাকে ফাকি দিয়ে বিয়ে করেছে। তখন তার যেহেতু বউ আছে তাই আমি তার সাথে আর সংসার করব না বলে ঠিক করি। তখন সে আমার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে শালিস দেয়। সালিশের উপস্থিত সকলে আমাকে তার ওয়ানে যেতে বললে আমি যেতে রাজি না হওয়ার তারা আমার বাবাকে ৫০ হাজার টাকা জরি মানা করে। আমরা তাউ মেনেনি। তাছাড়া আমার সাথে বিয়ের আগে সে আমাকে বলে যে আমি যদি তাকে বিয়ে না করি তাহলে সে আত্মহত্যা করবে।

গ্রামের অধিকাংশ হিন্দু মুসলিম জানায়, কৃষ্ণ খুব খারামঊ প্রকৃতির মানুষ ছিল। সে গ্রামের কাউকেই পরোয়া করত না। সে মরার আগে ও গ্রামের ভাল মানুষের ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল। ইউ পি সদস্য আওয়াল ইউনিয়ন পরিষদে শালিসের কথা স্বীকার করে বলে যে অভিযোগ তোঁ কৃষ্ণ নিজেই দিয়েছিল। তাহলে তাকে কেন ভঁয় দেখাতে হবে? সে মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত ছিল। শৈলকুপায় একবার তার এই সব নিয়ে সমস্যা হয়েছিল।

বগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানায় যে কৃষ্ণ খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ ছিল। তাই তাকে তার দ্বিতীয় বউকে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। এখন সে সবাইকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সে মূলত আত্মহত্যা করেছে।

হাটফাজিল পুর পুলিশ ক্যাম্পের এস আই ফারুক হোসেন জানায় যে শুনেছি আলফাপুর গ্রামের একজন আত্মহত্যা করেছে। তাকে মাগুরা নিয়ে গিয়েছিল। তবে আমাদের নিকট কেউ অভিযোগ করেনি।

সাংবাদিক এই প্রসঙ্গে জানার জন্য শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ কে মুঠোফোনে ফোন দিলে সে বলে যে আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো বলেই ফোন কেটে দেয়।

Comments

comments