ঢাকাসোমবার , ১৬ মার্চ ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে অবাধে বিক্রি হয় রোগাক্রান্ত পশুর মাংস

প্রতিবেদক
Kolom 24
মার্চ ১৬, ২০২০ ৪:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রোগাক্রান্ত পশুর বাসি ও পচা মাংসের ছড়াছড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজারে। কেউ কেউ আবার মৃত পশুর মাংসও বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিয়িত এসব মাংস কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। বিশেষজ্ঞরা জানান, এ মাংস খেয়ে মানুষের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, পায়ে পানি জমা, লিভারে চর্বি জমা, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন সব জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলায় ১১৯টি বাজার রয়েছে। যেখানে প্রতিদিনই পশু জবাই করা হয়। জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর ও ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে তা নিষ্ক্রিয়। প্রশাসনের এ নিরব ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

সরজমিনে দেখা যায়, সপ্তাহের সাত দিন জেলার বিভিন্ন বাজারে পশু জবাই হয়। প্রতি শুক্রবার জেলায় অন্তত ২৫০ থেকে ৩০০ গরু জবাই হয়। এছাড়া ছাগল, মহিষ ও ভেড়া তো রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ পশু বাইরে থেকে জবাই করে বাজারে আনা হয়। কোনো রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন বাজারে গরু জবাই করে বিক্রি করা হয়। এতে করে সুস্থ না কি অসুস্থ পশু পার্থক্য করার উপায় থাকে না।

মুরাদ মাহমুদ নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করেন, জেলায় বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষই আমিষের চাহিদা পূরণে মাংস খান। কিন্তু বাজারে মাংস কিনতে গিয়ে প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছেন তারা। রোগাক্রান্ত ও মরা গরু ও ছাগলের মাংসে ছেয়ে গেছে বাজার। শুধু তাই নয় কখনও কখনও বাসি ও পচা মাংস বিক্রি হয়। জবাই করা পশুর যেসব অংশ মানুষের খাবার অযোগ্য সেগুলো এখন আর বাদ দেওয়া হয় না। মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর ও পৌরসভার কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা নেই। জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি কর্মকর্তাদের বাজারে পশু ও মাংস পরিদর্শনের নিয়ম থাকলেও তা করে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোনো পশু অসুস্থ হলে পশুর মালিক মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই পশুর আনুমানিক মূল্য ৫০ হাজার টাকা হলেও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় কিনে নেন মাংস ব্যবসায়ীরা। এরপর জবাই করে বাজারে মাংস বিক্রি করা হয়। তবে এর অধিকাংশই চলে যায় স্থানীয় খাবার হোটেলে।

পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১১-তে বলা হয়েছে, যে কোনো পশু জবাইয়ের আগে পশুটি যে সুস্থ সবল তার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি কর্মকর্তার ঘোষণা থাকতে হবে। পশু জবাইয়ের পর ভেটেরিনারি কর্মকর্তার মাধ্যমে বিধি মোতাবেক যথাযথভাবে পরীক্ষা করতে হবে। এই বিধান লঙ্ঘন করলে ভ্রাম্যমাণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী, অনূর্ধ্ব এক বৎসর বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা ৫ হাজার এবং অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে অসুস্থ পশুর মাংস। এছাড়া মাঝে মধ্যেই নির্ধারিত দামের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে মাংস বিক্রি করা হয়।

কিশোরগঞ্জ ক্যাবের সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু বলেন, ভোক্তা অধিকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সাথে এ বিষয়ে অনেকবার কথা হয়েছে। মাংস ব্যবসায়ীরা পশু জবাই করে নকল সীল দিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। এমনকি তারা ছাগল জবাই করে খাসি বলে চালিয়ে দেয়। মৃত পশুর মাংসও অবাধে বিক্রি করে থাকে। ইদানিং দেখা যাচ্ছে রাস্তার পাশে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই করে দেদারছে বিক্রি করা হয়।

এ ব্যাপারে জেলার প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নজরুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জনবল সংকটের কারণে পশু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। এসব মাংস খেয়ে মানুষের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, পায়ে পানি জমা হওয়া, লিভারে চর্বি জমা হওয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন সব জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পৌরসভার অধীনে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর কর্তৃক বাজার মনিটরিং করানোর কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয় না। তবে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা এবং সেখানে সহযোগিতার কথাও বলেন তিনি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, বাজারে রোগাক্রান্ত ও মরা গরু-মহিষ ও ছাগলের মাংস বিক্রি হলে সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া বলেন, এ বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এমনটি না হয় সেদিকে পৌরসভার পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

Comments

comments