নিখোঁজের দীর্ঘ ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও সন্ধান মেলেনি গৌরনদীর মাদ্রাসা ছাত্র ইসমাঈল হাওলাদার মিদুলের (১৫)।
নিখোঁজ মিদুল বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দিয়াশুর গ্রামের মনিরুজ্জামান হাওলাদারের পুত্র। সে গৌরনদীর সীমান্তবর্তী মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হেফজ শাখায় অধ্যয়নরত ছিল।
নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রের পিতা মনিরুজ্জামান হাওলাদার জানান, ‘রমজানপুর গ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় তার দুই পুত্র ইসমাঈল হাওলাদার মিদুল (১৫) ও গোলাম মহিয়ান (৯) হেফজ শাখায় পড়াশুনা করতেন। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর বিকালে মিদুলের মা মাদ্রাসায় গিয়ে ছেলেদের সাথে কথা বলে মাওঃ ফোরকানের কাছে মাদ্রাসার বকেয়া বেতন বাবদ ৫,০০০ টাকা দিয়ে আসেন। ওইদিন রাতেই রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয় মিদুল। পরদিন সকালে মাদ্রাসার এক শিক্ষক মিদুলের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাকে মোবাইলে জানায়।
তিনি আরও জানান, মিদুল নিখোঁজ হওয়ার ৫ দিন আগে আমাদের না জানিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে হেফজ খানা থেকে সরিয়ে এনে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেতাবখানায় ভর্তি করেন এবং ২ ভাইয়ের বিছানা আলাদা করে দেন। মিদুল নিখোঁজ হওয়ার পরদিনই ওই মাদ্রাসার হেফজ শাখার শিক্ষক মাওলানা ফোরকান মাদ্রাসা থেকে চলে যান।
ওই শিক্ষকের নম্বরে দুইদিন যোগাযোগ করার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি ওই মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক মাওলানা জাকির হোসেনের কাছে পুত্র হারানোর বিষয়ে পরপর ৩ দিন ফোন করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। পুত্রকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকরা কোন সহযোগিতা না করায় মাদ্রাসা ছাত্র ইসমাঈল হাওলাদার মিদুলকে শিক্ষকরাই গায়েব করেছেন বলেও তিনি (মনিরুজ্জামান) উল্লেখ করেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর মিদুলকে না পেয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কালকিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন মনিরুজ্জামান (জিডি নং-৭৮৫)। ওই জিডির সূত্রধরে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ ফয়সাল আল মামুন কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চান মাদ্রাসা ছাত্র মিদুল নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পুলিশ কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে আদালত বিষ্ময় প্রকাশ করেন।
মিদুলের পরিবারের অভিযোগ, কালকিনি থানায় একাধিকবার মামলা দায়েরের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরবর্তিতে নিরুপায় হয়ে গত ০৫/১১/২০২০ ইং তারিখে মিদুলের বাবা মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩২৩/৩০২/২০১/৩৪ ধারায় তার পুত্রকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগ এনে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওঃ জাকির হোসেন,সহকারী শিক্ষক মাওঃ ফোরকান,রুহুল আমিন ও মাওঃ বিল্লাল হোসেনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালগঞ্জের পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।
Comments
comments