কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস সংক্রম বিষয়ে সরকারি চিকিৎসা কার্যক্রম নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আটককৃত সাংবাদিক এম আর রুবেল আজ শুক্রবার (২৪এপ্রিল) বিকেলে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩এপ্রিল) দিবাগত রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বাদী হয়ে ভৈরব থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করার পর পুলিশ সাংবাদিক এম আর রুবেলকে গ্রেফতার করে আজ শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেন ।
কারনে বৃহস্পতিবার (২৩এপ্রিল) গভীর রাতে ভৈরব থানায় মামলাটি দায়ের করেন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ। তিনি উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব। ওই রাতেই পুলিশ সাংবাদিক এম আর রুবেলকে তাঁর ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার ভৈরব প্রতিনিধি।
পুলিশ ও মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ভৈরবে করোনা সংক্রমণ শনাক্তে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে ২০ শয্যার ট্রমা সেন্টারে। সেটি আবার আইসোলেশন ইউনিট হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত কয়েকজন ওই সেন্টারে চিকিৎসাধীন। এই অবস্থায় করোনা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে বলা আছে, সুরক্ষাসামগ্রী না পরিধান করে কেউ ভেতরে যেতে পারবেন না। কিন্তু সাংবাদিক রুবেল বুধবার সকালে অনুমতি ছাড়াই সেন্টারের ভেতরে যান। ফিরে এসে ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করে নিজের ফেসবুকে একটি লেখা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে মামলার বাদী বুলবুল আহমেদকে উদ্দেশ্য করেও পৃথক লেখা প্রকাশ করেন। এতে করে উপজেলায় করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যক্রম নিয়ে সবার মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা অনেক চিকিৎসকের মনোবল ভেঙে যায়। মূলত রুবেল ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকে মিথ্যা তথ্য ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। তিনি করোনাবিষয়ক কার্যক্রম ও স্বাস্থ্য খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ফেসবুককে কাজে লাগিয়েছেন।
বাদী ডাঃ বুলবুল আহম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনার জন্য ভৈরব এখন স্পর্শকাতর এলাকা। এখন পর্যন্ত ৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৯ জন পুলিশের সদস্য। উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও আছেন আক্রান্তের তালিকায়। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করছি। অথচ রুবেল এই বিষয়ে নিজের পত্রিকায় না লিখে মনের মতো করে ফেসবুকে লিখেছেন। এতে আমাদের কর্মীদের মনোবল নষ্ট হয়েছে। ফলে প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
তবে পুলিশ হেফাজতে সাংবাদিক এম আর রুবেল বলেন, ‘আমার লেখায় এতটুকু ভুল ছিল না। প্রতিহিংসারও কিছু ছিল না। দেশের মানুষের ভালোর কথা ভেবে প্রমানাধি সংগ্রহ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য লিখেছিলাম।’
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন সাংবাদিকদের বলেন, মামলটি হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারায়। রুবেলকে শুক্রবার সকালে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাংবাদিক এম আর রুবেলের নামে হয়রানীমূলক মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সাংবাদিক সমাজ।
মোছা. শুভ্রা, কুলিয়ারচর প্রতিনিধি
Comments
comments