ঢাকাসোমবার , ২৭ এপ্রিল ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনায় পাকুন্দিয়ার কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা দিশেহারা 

প্রতিবেদক
Kolom 24
এপ্রিল ২৭, ২০২০ ১:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো কিন্ডারগার্টেনগুলোও বন্ধ রয়েছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ইতিমধ্যেই মার্চ মাসের বেতন পাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু বিপাকে রয়েছে কিন্ডারগার্টেনগুলোর শিক্ষকরা। নামমাত্র বেতনে চাকুরি করা এসব শিক্ষক অনেকেই এখন  মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এই চরম দুঃসময়ে তাদের দিকে তাকানোর কেউ নেই।

জানা গেছে, গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে  আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কিন্ডারগার্টেনগুলো যাত্রা শুরু করে। তাদের পাঠদান পদ্ধতি ও আধুনিকতা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে বিপ্লব সাধন করে। এক সময়ের ঢিলেঢালাভাবে চলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে দাঁড়াতে বাধ্য করে। এক সময়ে জেলা শহরে কিন্ডারগার্টেনগুলো থাকলেও এখন তা জালের মতো পুরো উপজেলা  ছড়িয়ে গেছে। প্রত্যন্ত জনপদে এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্ত এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে যারা চাকুরি করছেন তাদের নামমাত্র বেতন পেতেন। এই বেতন দিয়ে না চললেও প্রাইভেট পড়ানোর মাধ্যমে তারা তাদের সংসার চালিয়ে নিতেন। সরকার শিক্ষাব্যবস্থার নতুন এই ধারার সাথে তাল মিলিয়ে ইতিমধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে বই  দিয়ে তাদেরকে সরকারি কারিকুলামে চলার জন্যে নির্দেশনা দিয়েছে।

সেই ধারা মেনে ইতিমধ্যেই সরকারের সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে কিন্ডারগার্টেনগুলো। সর্বশেষ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৮মার্চ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। শিশুদের সুরক্ষার কারণে অভিভাবকরাও বন্ধ রেখেছে প্রাইভেট। ফলে অসহায় হয়ে পড়েছে এই সেক্টরে কর্মরত  শিক্ষক। এর সাথে রয়েছে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী।

কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি ঘোষণার কারণে হঠাৎ করেই কিন্ডারগার্টেনগুলো মাসের অর্ধেক সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া মাসিক টিউশন ফি সংগ্রহ করতে পারেন নি। ফলে মার্চ মাস চলে গেলে অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের শিক্ষকদের বেতন দিতে সক্ষম হয়নি। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানই ফেব্রয়ারি মাসের বেতন পর্যন্ত দিতে পারেন নি। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা  কিন্ডারগার্টেন  এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ আঃ হাই মাষ্টার জানান, পুরো উপজেলা প্রায় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন রয়েছে শিক্ষক সারে ৯ শত এদের প্রায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ফেব্রুয়ারি মাসের সম্মানি শিক্ষকদের দিতে পারেন নি। মার্চের শেষের দিকে ত্রৈমাসিক পরীক্ষা যদি হতো তাহলে আদায়কৃত টিউশন ফি দিয়ে শিক্ষকদের সম্মানি দেয়া সম্ভব হতো। এছাড়া শিক্ষকরা অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে টিউশনি করে সংসার চালান। বর্তমানে তাও বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত।

একজন স্কুল পরিচালক  জানান, তিনি তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ফেব্রুয়ারি মাসের সম্মানি দিতে পারলেও অনেকেই তা পারেন নি।

পাকুন্দিয়া  কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের আরেক জন নেতা কমরুল ইসলাম  জানান, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের কথা কেউ ভাবে না। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণে এদের অবদান শতভাগ।

সিসিমপুর কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তছলিমা আক্তার বলেন, আমাদের শিক্ষকরা চরম দুঃসময়ে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা দেশের এই দুঃসময়ে চরম অবহেলিত। তারা কারো কাছ থেকেই কোনোরকম সহযোগিতা পাচ্ছে না। সরকারের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ এরা লজ্জায় কারো কাছে সাহায্য চাইতে পারছে না।

এস এ আইডিয়াল স্কুলের পরিচালক সারোয়ার আলম বরকত জানান একটি কেজি স্কুলের মাসিক আয় বিদ্যালয়ের ঘর ভাড়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মানি ও  কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল,  ও পানির বিলসহ অন্যান্য খরচে সব চলে যায়। যা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে হিসেব দেখানোর প্রয়োজনীতা আছে এবং অনুমোদিত স্কুলের পক্ষ থেকে হিসেব জমাদানও করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের আয় তথা টিউশন ফি পাওয়া বন্ধ। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মচারীদের কথা চিন্তা করে আর্থিক প্রণোদনা দিলে উপকৃত হবে দেশের শিক্ষক সমাজ-এমনটাই দাবি তাদের।

হুমায়ুন কবির, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি   

Comments

comments