ঢাকাশুক্রবার , ৮ মে ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঘুড়ছে না চাকা, জ্বলছে না চুলা

প্রতিবেদক
Kolom 24
মে ৮, ২০২০ ৪:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

যানের চাকা ঘুরলে যাদের জীবনের চাকাও ঘোরে করোনা ঠেকাতে সরকারি ছুটির মধ্যে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে অচলাবস্থা। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি চলছে। বন্ধ রয়েছে সবরকমের গণপরিবহন।

এতে বিপাকে পড়েছেন পরিবহনের সাভার ও আশুলিয়ার বাইপাইল বাস কাউন্টারের মালিক ও শ্রমিকেরা। ‘দিন এনে দিন খাওয়া’ এই মানুষদের উনুনে আগুন জ্বালাতেও বেগ পেতে হচ্ছে। সরকার, পরিবহণ মালিক, শ্রমিক নেতাসহ কারো থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতা মিলছে বলেও অভিযোগ করছেন তারা। যদিও পরিবহন শ্রমিকদের জন্য তাদের ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করছেন এই সেক্টরের নেতারা।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় বাস, মিনিবাস, লেগুনা সহ সকল ধরণের যাত্রীবাহী যানবাহন। এতে করে ভীষন ভাবে বিপদে পড়েছে সাভার ও আশুলিয়ায় প্রায় তিনশত কাউন্টারে প্রায় তিনহাজার শ্রমিকেরা না খেয়ে জীবন জাপন করেন। তাদের মুল আয় হলো টিকিট কমিশন যা পায় তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন চালাতেন। ঘুড়ছে না চাকা জ্বলছে না চুলা।
সরেজমিনে ঘুড়ে দেখা যায়, সাভারে হেমায়েতপুর, রাজফুলবাড়িয়া, সাভার বাসস্ট্যান্ড, আশুলিয়ায় বাইপাইল, শ্রীপুর, জিরানী, চক্রবতী, নবীনগর, বিশমাইল কাউন্টার বন্ধ। অধিকাংশ কাউন্টারই বলতে গেলে ফাঁকা। অলস সময় পার করছে পরিবহন কাউন্টার শ্রমিকেরা।

মনির হোসেন নবীনগরে দেশ ট্রাভেলস, আলহামরা পরিবহন, ডিপজল পরিবহন কাউন্টার পরিচালনা করেন, তিনি বলেন, আমি বিগত বছর খানেক হল এই কাউন্টার পরিচালনা করি কিন্তু আমরা অনেক বিপাকে পড়ে গিয়াছি। গত মার্চ মাসের ১৮তারিখ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশ ট্রাভেলস পরিবহন। পর্যায়ে ক্রমে আলহামরা ও ডিপজল পবিবহন বন্ধ হয়ে যায়। সরকারের পক্ষে থেকে বাংলাদেশের সবখাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের দেখার কেও নাই। অনেক জায়গায় চেয়ারম্যানরা এান দিয়াছে আমাদের কেও এান দেই নাই। চোখে মুখে কোন রাস্তা খুজে পাচ্ছিনা।

হতাশা প্রকাশ করে শাহাবুল নামের কাউন্টার মাষ্টর বলেন, ‘কি করোনা আইল, কাজকাম বন্ধ। কোনোভাবে খাইয়া, না খাইয়া আছি। দুই দিনের বাজার আছে। তারপর বউ বাচ্চা নিয়া কি খামু? ক্যাম্পে কারও থেকে ধার নিমু সে সুযোগও নাই। যারা কাজ করে, সবার একই অবস্থা। কারো কাছে হাত তো পাততে পারি না ভাই। আমরা কাজ করার লোক। প্রতিদিন যা কমিশন পাইতাম টিকেট বিক্রি করে তা নিয়ে দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন রকম সংসার চলে যেত। এখনতো সব কিছু বন্ধ। তার মধ্যে দিতে হবে ঘড় ভাড়া এসব চিন্তায় রাতেও ঘুম আসে না।

বাইপাইল আলহামরা পরিবহন কাউন্টার মাষ্টার কথা হয় তার সাথে তিনি আমাকে যেমনটি জানিয়েছেন প্রায় দেড়মাস ধরে বইসা ছিলাম। বাড়িত চাল নাই। বাজার-সদাইও নাই। দু’দিন আগে পাশে এক কাউন্টার মাষ্টারের কাছ থেকে চাইয়্যা এক হাজার টাকা নিছি। অহন পকেটে একটাকাও নাই। তাই ভয়ে ভয়ে কাউন্টারে আইছি আসলেও পুলিশে পেটায়। সংসারের খরচ চালামু কেমনে? আক্ষেপ করে বলেন।

কাউন্টারের সামনে বেঞ্জে বসে অলস সময় গল্প করছিলেন আদিল (২৫)। তিন সদ্যসের পরিবারের কর্তা হয়ে করোনা কারনে কর্মহীন হাতগুটিয়ে বসে আছেন বলে জানালেন তিনি।

রাগে-ক্ষোভে অগ্নিশর্মা হয়ে আরেক কাউন্টার মালিক বলেন, কাউন্টার বন্ধ থাকায় খাইয়্যা না খাইয়্যা দিন কাটতাছে। গাড়িও চলে না বাড়ির চুলা জ্বলে না। করোনা আমগোর জীবনের চাকাডাই থামাইয়্যা দিছে। নেতারাও সবাই খালি ক্ষমতার লেইগ্যাই কান্দে। আমগোর লেইগ্যা কেউ কান্দে না।

আশুলিয়া সচেতন নাগরিক কমিটি’র সভাপতি লায়ন ইমাম হোসেন জানান, দেশের পরিবহন খাতে নিয়োজিত মানুষগুলো মুলত পুরোটাই যানবাহন চলাচলের উপর নির্ভরশীল। একদিন বন্ধ থাকলেও তাদের জীবিকা নিবার্হ করা খুবই মুসকিল। স্থানীয় ভাবে গুটি কয়েকজন ত্রাণ সামগ্রী পেলেও তা খুবই অপ্রতুল। সরকার ও পরিবহন নেতারা এ বিষয়ে দায়িত্ব নেয়া উচিত। গণপরিবহন বন্ধের নৌটিশের পাশাপাশি তাদের জীবিকা নির্বাহের বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরী।

Comments

comments