ভৈরবে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩শ ছাড়িয়েছে। ৯ জুন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০৫ জন। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৫ জন।
জানা যায়, ভৈরবে সর্বপ্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিল একজন এসআই ১০ এপ্রিল। পরে পর্যায়ক্রমে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), পুলিশ সদস্য, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ এ পর্যন্ত ৩০৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। যদিও ১৯ মে পর্যন্ত ভৈরবে মোট আক্রান্ত ছিল ৮২ জন। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ভৈরবের ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে দোকানপাট খুলে দেয়া হয়েছিল। এতে ভৈরবের অবস্থা অবনতির দিকে ধাবিত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ভৈরবের করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। এদের মধ্যে সবারই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনের নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া গেছে। বাকী ১৩ জনের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে ভৈরব করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, ভৈরবের মানুষের অসচেতনতায় দিন দিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৯ জুন পর্যন্ত ভৈরবে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩০৫ জন। সর্বশেষ ৫ জুন পর্যন্ত পাঠানো নমুনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ওই দিন মোট ১১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৯৯ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এদিন নতুন আক্রান্ত হয়েছে ৩৮ জন। পুরাতন রোগীদের মাঝে ২ জনের পুনরায় পজিটিভ এসেছে। মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৩ জন। ৯ জুন পর্যন্ত মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ৫৮৭ জনের তাদের মধ্যে ১ হাজার ৩২২ জনের রিপোর্ট হাতে এসেছে। এছাড়া গত ৪, ৬, ৭, ৮ জুন এর সংগ্রহকৃত নমুনার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো বলেন, ভৈরবের সকল এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগী ছড়িয়ে গেছে। এখনো যদি মানুষ সচেতন না হয় তবে এর ভয়াবহতা রোধে কঠিন হয়ে যাবে। এসময় ভীড় পরিহার করে ও সোস্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশিকা মেনে চলার আহবান জানান তিনি।
এ বিষয়ে ভৈরব করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা বলেন, ভৈরবের মানুষকে বার বার সচেতন করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। মানুষ নিজে থেকে না বুঝলে তাদের বুঝানোর ক্ষমতা কারোরই নেই। ভৈরবের অবস্থা আজ অবনতির দিকে। এই করোনা প্রাদুর্ভাবের ভয়াবহতা রোধে উপজেলা প্রশাসন ও ভৈরব চেম্বারের যৌথ উদ্যোগে ৫ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনের জন্য বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুধুমাত্র ওষুধের দোকান এবং কাঁচামালের দোকান ছাড়া সব ধরণের দোকান পাট বন্ধ থাকবে। তবে ধান-চালের আড়তগুলি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা এবং পেঁয়াজ-রসুনের আড়ত সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পড়তে ও নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়াসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
Comments
comments