জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতাল চত্ত্বরে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে আসছে। কেউ কেউ সংঘবদ্ধ চোর চক্রের খপ্পরে পড়ে হারাচ্ছে সর্বস্ব। গত বুধবার মাহাফুজা নামের এক বয়স্ক নারী হাসপাতালে লাইনে দাড়িয়ে টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই মুহুর্ত্বে অজ্ঞাত চার-পাঁচজন ছদ্মবেশী মহিলা লাইনে না দাড়িয়ে মাহাফুজার উপর চাঁপ সৃষ্টি করে তার গলায় থাকা ১ বড়ি ২ আনা পরিমাণের একটি স্বর্ণের চেইন চুরি করে নিয়ে যায়। যার বাজার মূল্য ৬০ হাজার টাকা। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই মাহফুজা ওই মহিলাদের আর খোঁজে পাননি। পরে এই বিষয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। শুধু মাহফুজাই নয়, মাহফুজার মত খাইরুল ইসলামও একই পরিস্থিতিতে শিকার। সে মোটরসাইকেল রেখে দু’তলায় গিয়েছিলেন তার স্বজনের সাথে এক নজর দেখা করতে। পরে নিচে এসে মোটর সাইকেলটি খোঁজে পায়নি। মাত্র কয়েক মিনিট ব্যবধানে তার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে যায়। পরে হাতপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা কিছু করার নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন। এদের মত আরো অনেকেই এই হাসপাতালে এসেছিলেন। কেউ চিকিৎসা নিতে কেউবা স্বজনের সাথে দেখা করতে। কিন্তু এসে হারিয়েছেন সর্বস্ব।
একাধিক সূত্র জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র হাসপাতালের অভ্যন্তরে ঢুকে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ ও রোগিদের কাছ থেকে কৌশলে অর্থকড়ি ও মালামাল নিয়ে যায়। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত বলে জানান তারা। হাসপাতালের অভ্যান্তরে এধরনের প্রতাণরা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবীও জানান স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জানান, হাসপাতালে নার্স, পিয়নরা সিনিয়র কর্মকর্তাদের আদেশ অমান্য করেন। তাদের দীর্ঘদিন ধরে বদলি না হওয়ায় এরকম প্রভাব বিস্তার করে। অনেকেই তাদের কর্মকান্ডে বিরক্ত। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ ধরণের ঘটনা ঘটছে।
ভুক্তভোগী মাহফুজা ও খাইরুল ইসলাম জানান, ‘বর্তমানে হাসপাতালটি প্রতারক চক্রের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এখানে দূর-দূরন্ত থেকে আসা রোগীদের জিনিস চুরি হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারার কারণে প্রতারক চক্রকে ঠেকানো যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
কটিয়াদী স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. নাজমুস সালেহীন বলেন, ‘চুরির বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগপত্র আসেনি। শিগগিই হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
এব্যাপারে কটিয়াদী মডেল থানার (ওসি) এম এ জলিল জানান, ‘এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।’