২০ সালে বিশ্ব ভ্রমণ
-তানিয়া সুলতানা হ্যাপি
বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুইপা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু।।
জীবনের অনেকটা সময় পেরিয়ে এসে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত এই কবিতাটি মনন-মানসে উপলুব্ধ হচ্ছিল বারবার। পরিচিত জনেরা জানেন আমি কতটা ঘরকুনো। আর একটু দূরের বন্ধুবান্ধব মানে যারা আমাকে রাজনৈতিক কর্মসূচী কিংবা ফেইসবুক বা অন্য কোন মাধ্যমে চিনেন তারা দেখেন আমি কতটা ছুটে চলা মানুষ। কাজের প্রয়োজনে কোথাও গেলে সেখানে একটা জার্নি হয়েই যায়। তবে আমার কাছে ট্যুর মানে হলো একেবারেই ঘুরাঘুরির জন্য ঘর থেকে বের হওয়া । যাকে বলে ব্যাগপ্যাক ট্রাভেলার। প্যারাময় জীবন থেকে কিছুটা অবসাদ নেয়ার জন্য ঘুরতে যাওয়া। মুক্তমনে ঘুরে বেড়ানো। ব্রেইন রিচার্জ করা। আগামী দিনে উদ্যম নিয়ে কাজের স্পৃহা খুঁজা।
ভ্রমণকণ্যা শুধুমাত্র মেয়েদের নিয়ে ঘুরাঘুরির সংগঠন। যদিও তারা আরো অনেক কাজ করে থাকে। দেশে বা দেশের বাইরে শুধুমাত্র নারীদের নিয়ে ঘুরতে গিয়ে সংগঠনটি ইতিমধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। তাদের ইভেন্টের সাথে আমার সময় ও সুযোগ ম্যাচ করলে আমি প্রায়ই তাদের সাথে ঘুরতে যাই।
২০২০ সাল কে আমি ভ্রমণবর্ষ হিসেবে পরিকল্পনায় রেখেছিলাম। ইচ্ছে ছিলো পুরো বাংলাদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করবো কাজের মাধ্যমে। ভ্রমণবর্ষে অবশ্য ডেল কার্নেগীর মতামতটা আমলে নিয়ে পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছিলাম। তিনি বলেছিলেন – ঘুরতে যাও কিন্তু সাথে কাজ রেখো। অনেকটা রথদেখা আর কলা বেচার মতো। কি কাজের পরিকল্পনা করেছিলাম সেটা আরেকটু পর বলছি…..
ভ্রমণবর্ষের প্রস্তুতি হিসেবে ২০২০ সাল আসার পূর্বেই ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর অংশ নিয়েছিলাম বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগে। দুই দেশের ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগের ভেন্যু ছিল কক্সবাজারের ইনানী বীচের রয়েল টিউলিপ রিসোর্টে। ৩ দিনের সফরের পুরোটা সময় কেটেছে বেশ চমৎকার। উক্ত কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন দুই দেশের সংস্কৃতিচর্চার স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, লেখক কবি- সাহিত্যিক ও সাংবাদিকবৃন্দ। ৩ দিনের ট্যুরের মাঝে অবশ্য আমি ১ দিন ঢাকায় এসে একটি জরুরি মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলাম। কেন মিটিংটা এতো জরুরি ছিলো, দুই দেশের ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ রেখে ঢাকায় আসতে হয়েছিলো তার বিস্তারিত বিবরণ থাকবে “২০শে বিশ্ব ভ্রমণ” বইতে।
বাংলাদেশ -ভারত ফ্রেন্ডশীপ ডায়ালগের প্রথমদিন সন্ধ্যায় হয়েছিলো ওরিয়েন্টেশন পর্ব। রিসোর্টের পাশে। রিসোর্টটি খুবই নান্দনিকসাজে সাজানো হয়েছিল। ছিলো সংগীত সন্ধ্যা, শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। কনফারেন্সে কেউ কেউ পূর্ব পরিচিত ও ছিলেন। কেউ কেউ বলছিলেন কোন কোন সেশনে তিনি অংশ নেবেন।কি নিয়ে কাজ করছেন তার বর্ণনা ও দিচ্ছিলেন কেউ কেউ। সমুদ্রের পাশে দুই দেশের মানুষের এমন মিলনমেলা সত্যি উপভোগ্য ছিলো। ৩ দিনে এতো দুর্দান্ত সময় কেটেছে যার বর্ণনা ও থাকবে “২০ শে বিশ্বভ্রমণ বইতে”।
