বিশ্বে মিষ্টি আলু উৎপাদনে ৩০তম স্থানে বাংলাদেশ রয়েছে। স্বাদে অনন্য পুষ্টিতে ভরপুর মিষ্টি আলু মূলত চাষ হয় ফিলিপাইন, জাপান, পাপুয়া নিউগিনি ও যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ মিষ্টি আলু চাষাবাদে নজর দিয়েছে। কৃষি সমৃদ্ধ দেশ গড়তে বদ্ধপরিকর বর্তমান সরকার। তাই কৃষি বিভাগ কৃষি পণ্য উৎপাদনে জোর দিয়েছে। কিশোরগঞ্জে মিষ্টি আলুর চাষাবাদ এক সময় হত না বললেই চলে। কিন্তু ধীরে ধীরে কৃষি বিভাগ কৃষকদেরকে উৎসাহ উদ্দীপনা যুগিয়েছে মিষ্টি আলু চাষাবাদে। তারই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জে এবার মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন আশা করছে কৃষকরা। ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশায় চাষাবাদে কৃষকরা মন দিয়েছে।
জানা যায়, স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি কিশোরগঞ্জের মিষ্টি আলু ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, গাজিপুর, টাংঙ্গাইল, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়।
কৃষি কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার হাওর অধ্যুষিত জেলায় মিষ্টি আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫০ হেক্টর ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন। স্থানীয় জাতের পাশাপাশি হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন চাষিরা। তবে স্থানীয় জাতের আলুর ফলনই বেশি হয়েছে বলে জানান চাষিরা।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা বিভিন্ন হাওরে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে থেকে শুরু হয় মিষ্টি আলুর চারা বপন। ফাল্গুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে থেকে মিষ্টি আলু মাটির নিচে পরিপক্ক হয়। আর চৈত্র ও বৈশাখ মাস আলু তোলায় ব্যস্ত থাকবে চাষিরা।
নিকলী সদর ইউনিয়নের পূর্বগ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, এ মৌসুমে দেড় একর (১৫০ শতাংশে) জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করেছি। প্রতি একরে ২৫০ মণ করে দেড় একর জমিতে ৩৭৫ মণ মিষ্টি আলুর ফলন হওয়ার আশা করছি। বাজারে দামও পাওয়া যায় ভালো। গত বছর প্রতি মণ মিষ্টি আলু পাইকারি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ বছর দেড় একর জমিতে চারা বপন ও আলু তোলা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল আলম বলেন, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জমির অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।