উজানের ঢলে হাওরের নদী ও খাল তীরবর্তী নিচু জমির আধাপাকা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ বছর জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে ইটনা উপজেলাতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে ২৫ হাজার ৮৩০ হেক্টর। কৃষি বিভাগ বলছে উজানের ঢলে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। কোনো উপায় না পেয়ে কৃষকরা পানির নিচ থেকে আধাপাকা ধান কেটে বাড়ি ফিরছেন। এদিকে সোমবার (০৪ এপ্রিল) পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পায়নি এবং পানির স্তর স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শুকনো মৌসুমে নদীর তীর ও খালের নিচু জমিতে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র কৃষকরা পত্তন নিয়ে বোরো ধান চাষ করে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বড় ধরণের ক্ষতির আশংকা থাকে। এ বছর আগাম পানি আসায় নদীর অববাহিকা ও নিম্ন চরাঞ্চলে জমিগুলো তলিয়ে গেছে। যদি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে তবে কৃষকদের ক্ষতি কেউ আটকাতে পারবে না। এদিকে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি এখনও মূল হাওরগুলোতে পানি ওঠেনি। শুধুমাত্র নদী ও খালের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে পানি ঢুকেছে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, প্রকল্প এলাকার বাহিরে, নদী ও খালের মধ্যে এ পানি ঢুকেছে। সেখানে আমাদের বাঁধ নেই। মূল হাওরে পানি ঢোকেনি।
অপরদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, মেঘালয়, আসামের বিভিন্ন জায়গায় ২৬৭ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছিল। সেই বৃষ্টির পানি এসে হাওরে ঢুকে। তবে মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি না হওয়ায় নতুন করে পানি হাওরে ঢুকেনি। এখন পর্যন্ত তা স্থির রয়েছে। তাতেই আমরা আতঙ্কে আছি। যদি আগামীতে বৃষ্টি হয় তবে বিভিন্ন হাওর তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম জানান, কৃষকদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তারা যোগাযোগ রাখছেন। যে সমস্ত জমির বোরো ধান ৮০ ভাগ পেকেছে তা দ্রুত কৃষকদেরকে কেটে ফেলার অনুরোধ জানাচ্ছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, উজানের ঢলে হাওরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। মূলত ধনু নদী পলি পড়ে ভরাট হওয়ায় পাহাড়ী ঢলের পানি নিম্নাঞ্চলসহ নদীর মোহনায় ছড়িয়ে পড়ছে। নদী ড্রেজিং ব্যতিত অকাল বন্যা রোধ সম্ভব নয়। নদীর গভীরতা ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments
comments