ঢাকাবুধবার , ২৪ জুন ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক থাকলেও সচেতনতা নেই

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুন ২৪, ২০২০ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দেশে দিনে দিনে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত ও মৃত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা লাখ পেরিয়েছে যা এ ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল দেশ চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। মারা গেছে দেড় হাজারের অধিক মানুষ। এরমাঝে প্রায় চল্লিশ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেড জোনভিত্তিক লকডাউন চলছে আর সেখানে সাধারণ ছুটি রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করলেও সচেতনতা নেই, মানছেন না বিধি-নিষেধ। অবশ্য মানুষের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালিত হচ্ছে। সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে সচেতনতা অবলম্বনের বিকল্প নেই।

এদিকে সারাবিশ্বে সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে, এই মহামারি এখন ‘নতুন আর বিপজ্জনক পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। গত শুক্রবার একদিনেই বিশ্বজুড়ে পৌনে দুই লাখের বেশি শনাক্ত হয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যাও কিছুদিন কম থাকার পর আবার বেড়েছে।

সচেতনতা অবলম্বন ও আতঙ্কের বিষয়ে দেশের কয়েকটি জেলার একাধিক মানুষের সঙ্গে কথা হয়। নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার বাসিন্দা কাওসার হুসাইন বলেন, ‘আতঙ্ক তো আছেই! কিছু মানুষ সতর্কতা অবলম্বন করলেও বেশিরভাগ মানুষই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্কও ব্যবহার করেন না। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সবখানে মানুষের জটলা। ফলে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলেও আমাদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। অবশ্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মানুষদের সচেতন থাকার জন্য অবহিত করে যাচ্ছেন।’

দিনাজপুর জেলার পাবর্তীপুর উপজেলার হাবিবুর জানান, ‘উপজেলাতেও করোনা সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের মাঝে কোনো ধরনের সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অন্য জেলা থেকে মানুষ আসলেও তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন না। সাধারণ ছুটির সময় মানুষের মাঝে সচেতনতা থাকলেও এখন দেখা যাচ্ছে না। যা সচেতন মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার আরেকজন বলেন, পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হতে হয়। রাস্তায় বের হয়ে ঘরে ফিরতে ভয় লাগে। নিজ উপজেলা ছেড়ে গ্রামে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখি মানুষের মাঝে কোনো ধরনের সচেতনতা নেই। লকডাউন এলাকার মানুষজনও বিধি-নিষেধ মানছেন না।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা মতে, ‘সংক্রমণ এখন ঊর্দ্ধমুখী। এই সংক্রমণের ধারা জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।’ তবে এসব পূর্বাভাস মিলছে না। এরআগেও ধারণা করা হয়েছিল জুনের শেষ নাগাদ দেশে সংক্রমণ কমে আসবে কিন্তু মানুষের মাঝে সচেতনতার অভাবে তা হচ্ছে না। এদিকে গত সোমবার এক প্রেস বিফ্রিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছেঁ তাতে মানুষ অধিক সচেতন না হলে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া কঠিন হবে।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা আশিকুল বললেন, এখানে তো মানুষ নিয়তির উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়েছেন। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে মানুষের মাঝে কোনো আগ্রহ নেই। তবে যে মানুষগুলো সচেতন থাকার চেষ্টা করছেন তারাই আতঙ্কে রয়েছেন।

করোনার মাঝে ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশবাহিনী। সারাদেশে এ পর্যন্ত সাড়ে আট হাজারের বেশি সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। পাবনা সদর থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন বলেন, পুলিশ হিসেবে দেশের ও মানুষের জন্য কাজ করতে হয়। এই সময়ে মানুষের মাঝে অসেচতনতা রয়েছে তারপরও ঝুঁকি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. একেএম মাহমুদুল হক বলেন, মানুষ যদি এভাবে অসচেতন থাকে তবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাবে। এতে করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে রাষ্ট্রের উপর চাপ বেড়ে যাবে। তাই নিজেদের প্রয়োজনেই সচেতন থাকতে হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালমা আক্তার বলেন, আমাদের দেশের মানুষ নিয়মের মধ্যে কখনও থাকেনি। একইসঙ্গে পরিষ্কার থাকার বিষয়েও উদাসীনতা রয়েছে। সে জায়গা থেকে করোনাকালে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কিছু ইতিবাচক বার্তাকে গণমাধ্যমসহ বিলবোর্ড ও পোস্টারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। একইসঙ্গে সরকারের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গ্রাম-শহরে সব শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে সুরক্ষিত হওয়ার উপকরণ পৌঁছে দেওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি তদারকি করতে হবে। আর প্রত্যেকে ঘরে-বাইরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতন হলেই করোনার সংক্রমণ রোধে আশাবাদী হওয়া যাবে।

Comments

comments