ঢাকাসোমবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে কমেছে কীটনাশকের ব্যবহার

প্রতিবেদক
Kolom 24
ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০ ৫:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জে ফসলি জমির ক্ষতিকর পোকা দমনে সেক্স ফেরোমন ট্র্যাপ ও বিষ টোপের পাশাপাশি পার্চিং পদ্ধতি ব্যাপক ব্যবহার বেড়েছে। ফলে মাটি এবং প্রাণীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে।জমিতে ধানের চারা রোপণের পর মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, চুঙ্গি পোকা, শিষ কাটা লেদা পোকাসহ নানান পোকা আক্রমণ করে। এসব পোকা পাখিদের প্রিয় খাবার। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে পাখিরা পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। ধানক্ষেতে ১৫-২০ হাত দূরে দূরে গাছের ডাল কিংবা কঞ্চি পুঁতে দেওয়া হয়। এসব ডাল কিংবা কঞ্চিতে কিছুক্ষণ পরপরই উড়ে এসে বসছে ও ক্ষেতের পোকা খাচ্ছে নানা জাতের পাখি। এভাবে কীটনাশক ছাড়াই সহজেই দমন হচ্ছে ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকা। পোকা দমনের পরিবেশ বান্ধব এ পদ্ধতির নাম পার্চিং। পাখি বসে এমন উঁচু ডাল বা খুঁটির নাম পার্চ। আর পার্চ থেকেই পার্চিং নামের উদ্ভব। পোকা দমনে এ পদ্ধতি শতকরা ৭৫-৮০ ভাগ কার্যকর। এ কারণে কীটনাশক ব্যবহার কমায় চাষিদের খরচ অনেকাংশে কমে গেছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার শুরুর পর ক্ষেতে পাখির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, অনিবন্ধিত কীটনাশকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে কীটনাশকের ক্ষতিকর দিকগুলোর বিষয়ে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব কলা-কৌশল ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে ধানের জমিতে গাছের ডাল কিংবা বঁাশের কঞ্চি রোপণ করা হয়। তখন এ গাছের ডালে উপকারী পাখি বা কীটপতঙ্গভূক পাখি বসে ধানগাছের শুধুমাত্র ক্ষতিকর পোকাগুলো দমন করে। ফলে কোনো ধরণের খরচ ছাড়াই ফসলি জমি থেকে পোকা দমন হয় এবং কীটনাশকের খরচ ও ক্ষতি থেকেও রক্ষা হয়। অপরদিকে পার্চিং তৈরি করতে ধঞ্চে গাছ ব্যবহার করলে এ গাছের দেহে এবং শিকড়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া প্রকৃতি থেকে নাইট্রোজেন তৈরি করে। ফলে জমিতে নাইট্রোজেন ও ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমিয়ে আনা যায়।


সদর উপজেলার মহিনন্দ গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক জানান, তিনি দুই একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করায় অর্থ সাশ্রয় ও পরিবেশ বান্ধবভাবে পোকামাকড় দমন হচ্ছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলার খামা গ্রামের কৃষক রহমান মিয়া জানান, স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ধানের জমিতে চারা রোপণের পরপরই ধঞ্চে লাগিয়েছেন। মাঝে মাঝে গাছের ডাল পুঁতে পার্চিং তৈরি করে সফলভাবে পোকা দমন করেছেন। আগের তুলনায় এ বছর কীটনাশকের ব্যবহারও কমিয়ে দিয়েছেন। জমিতে আগের তুলনায় ভালো ফসল হবে বলে তিনি আশাবাদী।


করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া জানান, তিনি এক একর জমিতে বোরো চাষ করেছেন। আগে পোকামাকড় দমনে প্রচুর কীটনাশক খরচ হতো। এখন পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করায় কীটনাশক লাগছে না। কীটনাশকের ব্যবহার কম হওয়ায় জমিতে পাখির সংখ্যাও বেড়েছে। জমিতে বক, শালিক, ফিঙ্গেসহ হরেক রকমের পাখির মেলা বসে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল আলম জানান, জমিতে অধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটির গুণগতমান ও বৈশিষ্ট্য নষ্ট হচ্ছে। মাটির অম্লতা নষ্ট হচ্ছে, পানি ধারণক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং অনুজৈবিক কার্যাবলি ব্যাহত হচ্ছে। এতে মাটির উৎপাদন ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সে কারণে কৃষকদের জৈব ও প্রাণিজ সার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পার্চিং ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে কৃষক সম্পূর্ণ বিনা খরচে ক্ষতিকর পোকা দমন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাই এ পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষক দারুণভাবে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

Comments

comments