ঢাকাবুধবার , ১০ জুন ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে অপ্রতিরোধ্য নারী উদ্যোক্তাদের স্বপ্নের যাত্রা

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুন ১০, ২০২০ ৪:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নারী কখনও মা, কখনও বোন, কখনও স্ত্রী। ঘর থেকে বেরিয়ে বিশ্বকে জয় করছে নারীরা। কিশোরগঞ্জেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। চিরচারিত সমাজ ব্যবস্থা থেকে ঘুরে দঁাড়িয়েছেন পঁাচ নারী। সংগ্রামী পাঁচ অপ্রতিরোধ্য নারী উদ্যোক্তারা কিশোরগঞ্জকে গড়ে তুলছেন একটু ভিন্নভাবেই। অনলাইন বা অফলাইনে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্য তুলে ধরছেন দেশের মানুষের কাছে। পরিচিত করছেন এ জেলার পাঁচ অক্ষরের নামটিও।

তাদের অগ্রযাত্রায় বদলে যাচ্ছে অনেক ঘরবন্দী তরুণীর জীবন। গ্রাম থেকে শহর, কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক নিজেদের ক্ষমতায়নের সিঁড়িতে দৃঢ়পায়ে হাঁটছে এই তরুণীরা। নিজেদের ক্ষমতায়নে নারী-পুরুষের সমতায় কিশোরগঞ্জের মেয়েরা এক রোল মডেল। এদের মধ্যে কেউ কাজ করছেন সোনালী আঁশ পাট নিয়ে, আবার কেউ কাজ করছেন এ জেলার ঐতিহ্যবাহী নকশী ও এলোকেশী পিঠা, কেউ কাজ করছেন জেলার আরেকটি পণ্য চ্যাপা শুটকি নিয়ে।
বৈশ্বিক জলবায়ু সমস্যা মোকাবেলা করতে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে দীর্ঘ তিন বছর ধরে পাট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নারী উদ্যোক্তা ডলিসের কর্ণধার তাহমিনা কবির। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যাগ বিশ্বজুড়ে যখন উদ্বেগের কারণ, তখন পাট পরিবেশ দূষণ কমাবে- এ চিন্তাধারা থেকে কাজ করে পলিথিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন এ তরুণী।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নে গচিহাটা গ্রামে তাহমিনা কবিরের জন্ম। বর্তমানে তিনি স্নাতক হোম ইকোনমিকস কলেজে রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরস ডিপার্টমেন্টের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। তাহমিনা দুই হাজার টাকা নিয়ে উদ্যোগের সূচনা করেন। তার উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শপিং ব্যাগ, লেডিস ব্যাগ, পার্স, অফিস ব্যাগ, টেবিল ম্যাট, রানার, অর্নামেন্ট বক্স, অর্নামেন্টস, করপোরেট গিফট আইটেম ওয়াল ম্যাট, লোগো ফ্রেম ইত্যাদি।

আরেকজন নারী উদ্যোক্তা আফরিন রহমান তুলি। স্বপ্নের যাত্রা সেও যুক্ত হয়েছেন। ৩ মাস ধরে জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্য নকশী, এলোকেশী ও সিরিজ পিঠা নিয়ে কাজ করছেন। এই অঞ্চলের পিঠার স্বাদ সম্পর্কে পরিচিত করতে উপজেলা ও জেলার বাহিরে পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি কিশোরগঞ্জের নকশী কিংবা এলোকেশী পিঠাকে বাংলাদেশের মধ্যে একটি ‘নবান্ন’ বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করতে চান। আফরিন রহমান তুলি কিশোরগঞ্জ সদরের নিউটাউন মহল্লার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে মাস্টার্স প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন।

রিমা আক্তারও নারী উদ্যোক্তা। সে পড়াশোনার পাশাপাশি ২০১৬ সালের প্রথম দিকে একটি প্রশিক্ষণের ভাতা হিসেবে পাওয়া ৭’শ টাকা দিয়ে শুরু করেছিলেন কুশিকাটার কাজ। তারপর থেকে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রায় ৫’শ নারীকে। কটিয়াদীর মেয়ে হয়ে গত চার বছরে কাজের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি ভাবে দেশে এবং বিদেশে নারী উদোক্তা হিসেবে মোট ৩৪টি প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন। বর্তমানে শুধু গ্রামীণ নারীরাই নয়, শহরের অনেক শিক্ষিত নারীরাও উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। তাদের আগ্রহে চালু করেছেন একটি ছোট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘রিমি ফ্যাশন’। তিনি ২০১৯ সালে উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে ‘অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ ‘জয়িতা’ পুরস্কার অর্জন করেন।

স্বপ্নের যাত্রায় যোগ দিয়েছেন আরেকজন নারী উদোক্তা রাজিয়া আফসার হিমু। তিনি কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়ছেন। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদরের পূর্ব-তারাপাশার বাসিন্দা। তিনি এই অঞ্চলের চ্যাপা শুটকি, পনির নিয়ে কাজ করছেন। সে পড়াশোনার পাশাপাশি মেধা আর মনন দিয়ে নিজের জেলার পণ্য সারাদেশে পরিচিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

নারী উদ্যোক্তা ফারজানা আক্তার। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে। সে কাজ করছেন কিশোরগঞ্জের নকশী বাংলা হস্তশিল্প ও কৃষিপণ্য নিয়ে। ২০০৯ সাল থেকে তার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নের পথযাত্রা। ভেজালমুক্ত কৃষিপণ্য মাশরুম নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করেন তিনি। প্রথমে বাধা আসলেও সাহস করে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যান এ উদ্যোক্তা। বর্তমানে তার হাঁতের কাজের ড্রেস শাড়ী, কৃষিপণ্য মাশরুম, সিজনাল সবজি, বাদাম, ভুট্টা, ড্রাগন নিয়ে কাজ করছেন। তিনি ভবিষ্যতে ১০ একর জায়গা নিয়ে কৃষিপণ্যের এগ্রোফার্ম নিয়ে পরিকল্পনা করছেন। দরিদ্র মানুষের জন্য দেশি পণ্য, ভেজাল মুক্ত খাবার পৌছে দিতে চান সব প্রজন্মের কাছে।

Comments

comments