সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুক, ইউটিউবে মাল্টা চাষ দেখে আগ্রহ জাগে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফখরুল ইসলামের। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে ৩১ শতক জায়গায় শখের বসে স্বপ্নের মাল্টা চাষ শুরু করেন কটিয়াদীর জালালপুরের আপন দুইভাই ফখরুল ও সাখাওয়াত। মাল্টা চাষ করার মাত্র আড়াই বছরের মাথায় গাছে ফলন আসতে শুরু করে। এখন সেই মাল্টা বিক্রি করে আয়ের স্বপ্ন দেখছেন। এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ উদ্বুদ্ধকরণ থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছেন বলে জানান তারা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, কটিয়াদী উপজেলায় ১৫ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে। স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষিরাও দিন দিন মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। চাষিদের প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করায় নতুন উদ্ভাবিত বারি মাল্টা-১ চাষে ক্রমেই ঝুঁকছে এ অঞ্চলের চাষিরা। ফলে জনপ্রিয় হচ্ছে বারি মাল্টা-১। এই ফলনটি রোপন করার মাত্র ২-৩ বছরের মাথায় গাছে ফলন ধরতে শুরু করে। প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত গাছগুলোতে ফলন ধরে বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জালালপুর ইউনিয়নের উত্তর চরপুক্ষিয়া গ্রামে সাখাওয়াত হোসেনের ৩১ শতক জমির উপর বারি মাল্টা-১ রোপন করা হয়েছে। সেখানে প্রতিনিয়ত মাল্টা বাগান দেখতে ছুঁটে আসছেন দর্শনার্থীরা। এই বাগানে স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগীতায় প্রায় দেড় শতাধিক চারা রোপন করা হয়। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে মাল্টা গাছে ফুল আসে। এখন মাল্টা পাঁকতে শুরু করেছে। সম্পুন্ন ফরমালিনমুক্ত এই মাল্টা অনেক সুস্বাদু বলে জানান চাষিরা।
মাল্টা চাষী সাখাওয়াত হোসেন ফুলু জানান, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে মূলত মাল্টা চাষে আগ্রহ জাগে তার। পরে কৃষি অফিসের পরামর্শেই মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হই। এবং তারা আমাকে বিভিন্ন ধরণের সহযোগীতা করেছেন। বাগানটির বয়স প্রায় আড়াই বছর। এখানে দেড় শতাধিক চারার মধ্যে ১৩০টিও বেশি চারার মধ্যে ফলন আসে। বাগানটি করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩০-৩৫ হাজার টাকা। এবছর প্রথম ফলন অনুযায়ী ৭০-৮০ হাজার টাকা বিক্রির আশা করছেন এই চাষী। পাশাপাশি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হকসহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন তিনি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুকশেদুল হক জানান, ‘ বর্তমান কৃষি হচ্ছে বানিজ্যিক কৃষি। সাখাওয়াতের মতো আরো ১০ দশ উদ্যোক্তার ১৫ বিঘা জমিতে মাল্টা বাগান প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মাল্টা চাষের জন্য এখানকার মাটি বেশ উপযোগী। আমরা মাল্টা চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। ক্রমান্বয়ে উপজেলায় মাল্টা চাষের পরিধি বাড়ছে। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের মাল্টা দেশের চাহিদা পূরণ করে দেশের বাহিরেও রপ্তানি করা যাবে জানিয়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাল্টা চাষীদের সবসময় সহযোগীতার আশ্বাস দেন তিনি।
Comments
comments